সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ ও বেতন ভাতাসহ লালমাটিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কলেজের তহবিল তছরুপসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি।
এর আগে কলেজ সরকারি করণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ৫৫ জন শিক্ষক নিয়োগ, একই সময়ে দুই হেড থেকে একই বেতন-ভাতা গ্রহণ, কলেজের বাসায় থাকা অবস্থায় বাসা ভাড়া ভাতা গ্রহণসহ বিভিন্ন খাতের টাকা কলেজ তহবিল থেকে পরিশোধ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ উঠে অধ্যক্ষ ড. মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন কোনো সত্যতা মেলেনি বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনুকরণীয় হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর লালমাটিয়া মহিলা কলেজ নিরীক্ষা ও পরিদর্শন করে। এই নিরীক্ষা ও পরিদর্শন প্রতিবেদনে অনিয়মের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অধ্যক্ষ ড. মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লিখিত পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যেরও সত্যতা মেলেনি বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কলেজের সর্বশেষ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা হয় ২০১৩ সালে। এরপর ২০১৩ থেকে ২০২২ পর্যন্ত নিরীক্ষায় প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক, ভৌত অবকাঠামোগত ও উন্নয়ন এবং আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত সকল তথ্য-উপাত্ত এবং সংশ্লিষ্ট সকল দালিলিক প্রমাণাদি পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষান্তে উল্লিখিত প্রতিবেদনের মন্তব্য ও সুপারিশে তুলে ধরা হয়।
প্রশাসনিক মন্তব্য ও সুপারিশ বলা হয়েছে যে, বর্তমান কলেজ প্রশাসন ২০১২ সাল থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোনো ফি না বাড়িয়ে, সকল পরিচালনা ব্যয় ও উন্নয়ন ব্যয় ছাড়াও শিক্ষক কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বাবদ প্রায় ২১ দশমিক ১৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এরপরেও কলেজের যথেষ্ট তহবিল সৃষ্টি করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে পরিচালনা পরিষদ ও বর্তমান অধ্যক্ষের উল্লেখযোগ্য অভিনব উদ্যোগ ও কার্যক্রম দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হতে পারে।
এছাড়া নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি। সরকারিকরণের নিমিত্তে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার পর অত্র কলেজে কোনো শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অধ্যক্ষের বেতন ভাতা যাচাই সংক্রান্ত তথ্য ও মন্তব্যে দুর্নীতির মাধ্যমে বেতন-ভাতা গ্রহণ, একইসময়ে দুই হেড থেকে বেতন ভাতা গ্রহণ, কলেজের বাসায় অবস্থানকালে বাসা ভাড়া ভাতা গ্রহণ বা কলেজ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার কোনো অভিযোগেরও প্রমাণ মেলেনি।
সাধারণ তহবিল সংক্রান্ত তথ্যে পরিদর্শনের তারিখ পর্যন্ত কলেজ তহবিলে উদ্বৃত্ত ৮১ দশমিক ১১ কোটি টাকা। এ অসামান্য সফলতা প্রকৃতপক্ষে সম্ভব হয়েছে বর্তমান কলেজ প্রশাসন কর্তৃক নিজস্ব সফটওয়ারের মাধ্যমে হিসাব পদ্ধতির আধুনিকায়ন, সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে সকল লেনদেন সম্পাদন, নিয়মিত ইন্টারন্যাশনাল চেকিং এবং সকল আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে; যা দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনুকরণীয় হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় লালমাটিয়া মহিলা কলেজের বিজ্ঞপ্তিতে।