ভোরের উশনতায় হাজারো শালিকের মিলন মেলা। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে নাটোর বনপাড়া
মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মুক্তা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট সূর্যোদয়ের আগ থেকেই বিভিন্ন ভবনের ছাদ ও বৈদ্যুতিক তার ও হোটেলের সামনেই মাটিতে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করে হাজার হাজার শালিক পাখি। কখন ছিটাবেন খাবার। ঠিক সময়মতো প্যাকেট ভর্তি চানাচুর নিয়ে হাজির হোটেল মালিক আল -আমিন ও আর কিছু কর্মচারীরা।
কিচিরমিচির শব্দে ছুটোছুটি-হুরোহুরি। এরপর পেটপুরে চানাচুর খেয়ে ছুটে চলে এদিক সেদিক। এ যেন এক অপার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। প্রায় কয়েক বছর ধরে শালিক পাখিদের এভাবেই আপ্যায়ন করছেন আল-আমিন।
আল-আমিন ও তার কর্মচারীরা জানান, খুব ভোরে হোটেলে আসতে হয় আমাদের । একদিন দোকানের সামনে কয়েকটি শালিক পাখিকে খাবারের জন্য চেঁচামেচি করতে দেখে তাদের চানাচুর খেতে দেন একজন পথচারী । ঠিক পরদিন একুই ভাবে খাবারের জন্য পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারাও খাবার দেন আনন্দচিত্তে। এভাবে শালিক পাখিদের সঙ্গে তৈরি হয় সখ্যতা তাদের।
বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার শালিক পাখিকে প্রায় পাচঁশো থেকে হাজার টাকার চানাচুর দিয়ে আপ্যায়ন করে চলেছেন তিনি। আর এ কাজটি তিনি করছেন কয়েক বছর ধরে।
শালিক পাখিকে খাবারের এ আয়োজন যাতে ভবিষ্যতেও চালু থাকে সে উদ্যোগ নিয়েছেন আল- আমিন।
সমরের অনুপস্থিতিতে কখনও তার বাবা, ভাই , স্বজন অথবা দোকানের কর্মচারীরা পাখিকে খাবার দেন। তিনি আশা করেন, তার দেখাদেখি পাখিদের আপ্যায়নে অন্যরাও এগিয়ে আসবেন।
শালিকদের আপ্যায়নের দৃশ্য মন কাড়ে প্রাতঃভ্রমণে বের হওয়া মানুষ আর পথচারীদের। ভ্রমণে ও জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ অবাক হয়ে দৃশ্যটি উপভোগ করেন। আর সাধুবাদ জানান এই পাখি প্রেমকে।
হাটিকুমরুল এলাকার বাসিন্দা ও মনিরুল ইসলাম ও শাহীন আলম জানান, প্রতিদিন ভোরে বেলা একটু হাঁটাহাঁটি করি। একদিন ওই দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় দেখি পাখির কিচিরমিচির। কাছে গিয়ে দেখি হাজার হাজার শালিক পাখিকে চানাচুর খাওয়াচ্ছেন আল-আমিন । আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে বিষয়টি। এমন মানুষও বর্তমান সমাজে আছে। তিনি অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার এই পাখিপ্রেম দেখে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
স্থানীয়রা মনে করেন আল-আমিনের মত পাখিপ্রেম জীববৈচিত্র ও প্রকৃতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে। তাকে দেখে যদি অন্যরাও উৎসাহিত হয়ে পাখির প্রতি ভালবাসা নিয়ে এভাবে কাজ করে তাহলে সমাজ ও দেশ উপকৃত হবে।