সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে চায়না খাতুন (১১) নামে এক প্রতিবন্ধী শিশুকে হত্যার দায়ে আপন চাচাসহ দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন। দ-প্রাপ্তরা হলেন, সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার ছোট বেড়া খারুয়া গ্রামের নিহত শিশুর চাচা সাদ্দাম হোসেন (৩৩) ও একই গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য আকবর আলী (৪৪)। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাদ্দাম হোসেনের সাথে তার চাচাতো ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। চাচাতো ভাইদের ফাঁসাতে সাদ্দাম হোসেন আপন বড় ভাই জহুরুল প্রামাণিকের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে চায়নাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আকবর আলী। ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে বেড়াতে যায় চায়না। রাতের খাবার শেষে চায়না ঘুমিয়ে পড়লে সাদ্দাম তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির বাইরে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করেন। পরে মরদেহ বেড়া খারুয়া চরে নিয়ে চাকু দিয়ে চায়নার গলা কেটে ফেলেন। এরপর মরদেহ সেখানেই ফেলে রেখে চলে যান তিনি।
পরদিন ২৬ ডিসেম্বর সকালে বেড়া খারুয়া চরে চায়নার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার মূল রহস্য। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য সাদ্দাম ইউপি সদস্য আকবর আলীর প্ররোচনায় আপন ভাতিজি চায়নাকে হত্যা করেন। পরে পুলিশ সাদ্দাম হোসেন ও আকবর আলীকে গ্রেফতার করে। তারা দু’জন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত মঙ্গলবার এ রায় দেন।