কোভিড মহামারীর কারণে গত দুই বছর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাদের সামরিক উপদেষ্টারা। কোভিড পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে এবার একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সশরীরে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
গতকাল রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। শহীদ দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি ও নির্দেশনা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অধ্যাপক আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে’ এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। উপাচার্য জানান, ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শ্রদ্ধা জানাবেন জাতীয়
সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা। এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিন ও হলের প্রাধ্যক্ষরা। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিপর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা যাবে।
উপাচার্য জানান, জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে বের হওয়া যাবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট ম্যাপও করা হয়েছে। রুট ম্যাপ যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ করেছেন উপাচার্য। তিনি জানান, একুশে উদ্যাপনে সার্বিক ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের জন্য শারীরিক শিক্ষকেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থাকবে। শহীদ মিনার এলাকায় কোনো মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না এবং কোনো ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না।
উপাচার্য আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় কোনো অনুমোদনহীন দোকান থাকবে না। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজধানীতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, পলাশী থেকে শুরু করে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। কোনো ব্যাগ কিংবা জিনিসপত্র নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় আসা যাবে না।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিদেশি কূটনীতিকরা দোয়েল চত্বর দিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসবেন। আর মন্ত্রীরা দোয়েল চত্বরের সামনের জিমনেশিয়ামে গাড়ি রেখে হেঁটে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন। এরপর সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।