আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে। শুরু হয়েছে নির্বাচনী কেনাকাটাও। নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপতে প্রায় ৭০০ টন কাগজ অর্ডার করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের অন্যান্য মালামাল কেনা নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি সচিবালয়। চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের শুরুতে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসি কেনাকাটা শুরু করেছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন আগামী বাজেটে মোট ৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। এর মধ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইভিএম মেরামত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের জন্য আগামী অর্থবছরে ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১ লাখ ১০ হাজার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মেরামতের জন্য চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ইসি এ বরাদ্দ চেয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও ইসি সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারে নির্বাচনী ব্যয় দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে। কেননা ২০১৮ সালে সংসদ, উপজেলা ও সিটি নির্বাচনের জন্য মাত্র দেড় হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল।
এবারের সেই ব্যয় দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ঈদুল ফিতরের পরপরেই গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বছরে মার্চে হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাজেট বরাদ্দ নিয়ে অর্থসচিবের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় (অর্থ মন্ত্রণালয়, ইসি ও পরিকল্পনা কমিশন) বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও কিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি ৪০ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যয়ের খাত আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার জন্য তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য বিষয়ে বরাদ্দ নিয়ে সমস্যা নেই, ইসি যেভাবে চেয়েছে সেভাবে হয়েছে। শুধু নির্বাচনী বাজেট নিয়ে কিছু মতপার্থক্য থেকে গেছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন, পরের অন্যান্য নির্বাচনের জন্য সরকারের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তখন সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকার মতো। এ ছাড়া সিটি নির্বাচন ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। আর জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আরও ৩০০ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল।