চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জানাতে বলা হয়েছে।
কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধিকে।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুলপুর এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন’ প্ল্যান্ট নামে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ, কুমিরা ও সীতাকুণ্ড স্টেশনের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরণের কোনো কারণ জানা যায়নি। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আহত অবস্থায় ১৮ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নিহতদের মধ্যে চারজন হলেন শামসুল আলম (৬৫), ফরিদ (৩৬), রতন লকরেট (৪৫), আব্দুল কাদের (৫৬)। অপর ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আহত ১৮ জন হলেন- ১. ফোরকান আলী (৩৩), ২. মো. নূর হোসেন (৩০), ৩. মোতালেব (৫২), ৪. মো. আরাফাত (২২), ৫. মাকসুদুল আলম (৬০), ৬. মো. ওসমান (৪৫), ৭. মো. সোলায়মান (৪০), ৮. মো. রিপন (৪০), ৯. মো. আজাদ, ১০. মো. রিপন মারুফ (৬০), ১১. প্রবেশ (৪০), ১২. নারায়াণ ধর (৬৪), ১৩. মো. জসিম (৫০), ১৪. ফেন্সি (২৬), ১৫. মো. জাহেদ (৩০), ১৬. মুজিবুল হক (৪৫), ১৭. রোজী বেগম (২০) ও ১৮. নাসিম শাহরিয়ার (২৬)।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় চমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সাইরেন বাজিয়ে একের পর এক আসছে অ্যাম্বুলেন্স। আহতদের বেশিরভাগের শরীরের বিভিন্ন অংশ উড়ে গেছে। আগে থেকে স্বজনদের কেউ কেউ এসে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের চিৎকারে ভারী হয়ে উঠেছে চমেক হাসপাতালের আশেপাশের এলাকা।
আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান। তিনি বলেন, আমি নিজে জরুরি বিভাগে চলে আসছি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন। তারা আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে আমরা ওষুধ, সেলাইন, ইনজেকশন দিচ্ছি।
চট্টগ্রাম জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানে রয়েছি। ডিসি ও এসপি স্যারের নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনো সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি।