তিন দিনের সফরে আগামী ১০ই মার্চ ঢাকা আসছেন ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক বৃটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান। নেপাল হয়ে বাংলাদেশে আসছেন তিনি। গত অক্টোবরে বৃটিশ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফসিও) অফিসে ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সাউথ এশিয়ায় এটাই হবে তার প্রথম সফর। ঢাকার দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র মানবজমিনকে সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানিয়েছে, গুড উইল ভিজিটে আসা বৃটিশ মন্ত্রী অ্যান-মারির আলোচ্যসূচিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অগ্রাধিকার থাকবে। তবে গণতন্ত্র, রাজনীতি, অর্থনীতি, মৌলিক মানবাধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কোর ইস্যু এবং সম-সাময়িক বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে।
সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের সঙ্গেও তার মতবিনিময় হতে পারে। নিরাপত্তাজনিত কোনো উদ্বেগ না থাকলে তিনি কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আগ্রহী। তাছাড়া ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে অনুষ্ঠেয় সেমিনার টাইপ একটি বৈঠকেও অংশ নিতে পারেন। সফরসূচির অনেক কিছু এখনো চূড়ান্ত হয়নি দাবি করে সেগুনবাগিচার এক কর্মকর্তা বলছেন, বৃটেনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ানের সফরটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তিনি সরাসরি চীন, উত্তর-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে বৃটেনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি দেখভাল করেন।
তাছাড়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিশেষত: রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, প্রযুক্তির বিস্তার ও ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত। তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এ অঞ্চলে বৃটেনের স্বার্থে আঘাত বা প্রতিবন্ধকতায় নিষেধাজ্ঞার মতো বিরক্তিকর ইস্যুতে কনজারভেটিভ পার্টি এবং সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অ্যান-মারির রিপোর্ট তথা মূল্যায়নের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের কেবিনেটে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার আগে অ্যান-মারি বৃটেনের ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট দেখভাল করতেন। তার আগে তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। বোর্ড অব ট্রেডের সভাপতিও ছিলেন। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ এর প্রেসিডেন্সির জন্য অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার বিষয়ে বৃটেনের আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন ছিলেন তিনি। বৃটেনের ব্যবসা ও জ্বালানি দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে ক্লিন এনার্জি এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বৃটেনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রশংসনীয় কাজ করেছেন অ্যান-মারি। ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে বারউইক-আপন-টুইড নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যান-মারি। বহু বছর হাউস অফ কমন্সের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে কাজ করেছেন। এমপি হওয়ার আগে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সংসদীয় সচিব হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন।