জাতীয় অর্থনীতি যে হারে বিকশিত হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালের শেষ দিকে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাদ পড়বে বাংলাদেশ।
কাতারের রাজধানী দোহায় চলমান এলডিসি সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
বৈশ্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৯৭১ সাল থেকে লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ বা এলডিসি সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে জাতিসংঘ। প্রতি ১০ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় এই সম্মেলন।
প্রত্যেক সম্মেলন শেষে বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। ৩ বছর পর পর সেই তালিকা পর্যালোচনা করে জাতিসংঘ। ২০২১ সালে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে সে বছর হয়নি। চলতি বছর কাতারের রাজধানী দোহায় ৫ মার্চ শুরু হয়েছে সম্মেলন, চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত।
এর আগে ২০১১ সালের সম্মেলনে বিশ্বের দরিদ্রতম ৪৫টি দেশের তালিকা করা হয়েছিল। সে তালিকায় বাংলাদেশের নামও ছিল।
জাতিসংঘের বরাত দিয়ে ফ্রান্সের বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৩ বছরের মধ্যে এই তালিকা থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছে ৭টি দেশ— ভুটান, বাংলাদেশ, নেপাল, লাওস, অ্যাঙ্গোলা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, এবং সাও তোম।
মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটির কিছু বেশি। শ্রমঘন এই দেশটির বিদেশি মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত তৈরি পোশাক বা গার্মেন্ট। এলডিসি তালিকাভুক্ত হওয়ার সুবাদে এই খাতের আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ কিছু সুবিধা পায়।
এই তালিকা থেকে বাদ পড়লে হারিয়ে যাবে সেসব সুবিধাও। তবে এ ব্যাপারে দৃশ্যত তেমন উদ্বিগ্ন নন দেশটির কর্মকর্তারা।
এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে বর্তমনে দোহায় আছেন বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট আরদাশির কবির। এএফপিকে এ সম্পর্কে তিন বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি না। তিন বছর অনেক সময়; আমরা নতুন নতুন আরও অর্থনৈতিক খাত তৈরি করব, সামনে এগিয়ে যাব।’
‘আর এটা সত্য যে, এলডিসি তালিকা থেকে বাদ পড়লে কিছু সুবিধা আমরা হারাব; কিন্তু বিশ্বের বৃহৎ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ পেতে হলে এই তালিকা থেকে আমাদের বাদ পড়া জরুরি।’