বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

কয়লাখনি অনুসন্ধান করতে চায় রাশিয়া

রিপোর্টারের নাম / ২১৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:২৬ অপরাহ্ন

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়েছে। রাশিয়ার বেশির ভাগ অর্থায়নে হতে চলা এই প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এ বিষয়ে আলোচনা হলেও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ-রাশিয়ার তিন দিনের ভার্চুয়াল যৌথ কমিশন বৈঠকের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়টি অমীমাংসিত রেখে নতুন করে বাংলাদেশের জল ও স্থলভাগে তেল, গ্যাস ও কয়লা অনুসন্ধানের প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। তবে কী পদ্ধতিতে তারা এটি করতে চায় বৈঠকে তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

অন্যদিকে বাংলাদেশের জ্বালানিসংকট সমাধানে স্বল্প মেয়াদে (শর্ট টার্ম) স্পট মার্কেট থেকে বাংলাদেশে এলএনজি (লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস) রপ্তানি করতে চায় রাশিয়া। তবে এতে খরচ বেশি হওয়ায় আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ। কারণ, স্বল্প মেয়াদে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করতে হলে বেশি দাম দিতে হবে। সেই সঙ্গে বর্তমানে চলমান ডলার সংকটের সময় দ্রুত অনেক বেশি ডলার পরিশোধ  কিংবা কোন পদ্ধতিতে অর্থ পরিশোধ করা হবে সেই জটিলতা (কোন কারেন্সিতে) কাটানো সম্ভব নয়। ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে (কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত ইত্যাদি) যে ধরনের দীর্ঘ মেয়াদে (লং টার্ম) আমদানি চুক্তি রয়েছে, তেমনটি করতে চায় বাংলাদেশ।

রাশিয়ার সঙ্গে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যৌথ কমিশনের দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার তৃতীয় দিনের বৈঠক শেষে একটি প্রটোকল চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, দুই দিন বৈঠকের পরও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কিস্তি পরিশোধে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছা যায়নি।

প্রথম দিনের আলোচনায় কোনো মীমাংসা না হওয়ায় তা গড়ায় দ্বিতীয় দিনে। শেষে বিষয়টি সমাধানে সরাসরি বৈঠক করার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ।

বৈঠকে দ্বিতীয় দিন অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞায় থাকা ৬৯টি রুশ জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয় রাশিয়ার পক্ষ থেকে। বলা হয় এসব জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে ব্যবস্থা নিতে হবে। গত বছর ২০ ডিসেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামালবোঝাই রাশিয়ার একটি জাহাজ সমুদ্রবন্দরের কাছাকাছি এলেও ভিড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। এ ঘটনার বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করা হয়। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি সম্ভব নয়। কারণ এই নিষেধাজ্ঞা আমেরিকার। এটি তুলতে হলে আমেরিকাকেই তুলতে হবে।

সূত্র জানায়, ভোলায় গ্যাস অনুসন্ধানে রাশিয়া আরো সমীক্ষা চালাতে চায়। একই সঙ্গে  পেট্রোবাংলা ও গ্যাজপ্রমকে কারিগরি সহায়তা দিতে চায় দেশটি। সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব স্থল ও সমুদ্রে সাড়ে চার হাজার থেকে ছয় হাজার মিটার গভীরতায় কূপ খনন করে গ্যাস ও তেলের অনুসন্ধান করতে চায়। পাশাপাশি গ্যাসের বিষয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান করতে আগ্রহী দেশটি। সেই সঙ্গে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট-১ ও ২-এর আধুনিকায়ন ও সংস্কারের জন্যও আগ্রহ দেখিয়েছে তারা।

সূত্র জানায়, বৈঠকের প্রথম দিন ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কমিশন বৈঠকের আলোচনায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় দিন অংশ নেন প্রায় ৩০টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা। আজ অংশ নেবে বাকি ১৭টি মন্ত্রণালয়।

দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও ইউরোপ উইংয়ের প্রধান উত্তম কুমার কর্মকার। রাশিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন রাশিয়া ফেডারেশনের ফেডারেল এজেন্সি ফর ফিসারিজের প্রধান ইলিয়া ডি শেসতাকভ।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রস্তাব : আন্ত কমিশন বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্যাকেজে রাশিয়ার কাছ থেকে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্পে কী ধরনের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনা হবে সেটিও জানানো হয়েছে। এতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া। শিগগিরই চুক্তি হতে পারে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষে মোবাইল রোমিংয়ের খরচ কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাশিয়াকে। আইসিটি বিভাগ থেকে তথ্য-প্রযুক্তিতে ব্যাপক প্রশিক্ষণ এবং সাইবার নিরাপত্তায় সহায়তা চাওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir