বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

১০ স্থানে অনুসন্ধানে বিশেষ চুক্তিতে যাচ্ছে বাপেক্স

রিপোর্টারের নাম / ২৫০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩, ২:৫৫ অপরাহ্ন

অমিত সম্ভাবনা থাকলেও গত ১০০ বছরে দেশের তিন পার্বত্য অঞ্চলে মাত্র একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। গ্যাস খুঁজতে বারবার উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও পাহাড়ে অজ্ঞাত কারণে অনুসন্ধান জোরদার হয়নি। তবে এবার পাহাড়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাপেক্স। এ জন্য বহুজাতিক তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানির (আইওসি) সঙ্গে যৌথ প্রতিষ্ঠান গঠনেরও উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলার অধীন রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। সূত্র বলছে, এরই মধ্যে অনুসন্ধানের জন্য তিন পার্বত্য জেলার ১০ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। অনুসন্ধান শুরু করতে যৌথ প্রতিষ্ঠান গঠনে তৈরি করা হয়েছে নতুন ধরনের মডেল ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির খসড়া। শিগগির এই প্রস্তাবনা জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হবে। সরকারের অনুমোদন পেলে নির্বাচিত আগ্রহী আইওসির সঙ্গে চুক্তি করবে বাপেক্স।

পাহাড়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যে স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো– ভুয়াছড়ি, সারডেং-সাবতাং, সিসাক, গোবামুড়া-কামুপাড়, চাংগুতাং, বরকল, বেলাছড়ি, গিলাছড়ি, বান্দরবান ও মাতামুহুরী। অল্প সময়ের মধ্যে এসব এলাকায় অনুসন্ধান শুরু করতে চায় বাপেক্স। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে গ্যাসের দাম বাড়ানোসহ নানা প্রস্তাব দেওয়া হবে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত পাহাড়ে ১৪টি কূপ খনন করে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত সেমুতাং পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র। ষাটের দশকে ওজিডিসি এই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। পাঁচটি কূপের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এক বছর ধরে ওই ক্ষেত্র থেকে গ্যাস ও তেল উত্তোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১১ সালে ৫ নং কূপ থেকে ৬৫ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে এ গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। পরে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম সেমুতাংয়ে ৬ নং কূপ খনন করে। বর্তমানে এই ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, দেশের স্থলভাগে এখনও গ্যাস পাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকা খুব সম্ভাবনাময়। পার্বত্য চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ১৬০টি কূপ খনন করে ১১টি গ্যাসক্ষেত্র পাওয়া গেছে। অথচ বাংলাদেশ পার্বত্য অঞ্চলে মাত্র ১৪টি কূপ খনন করেছে। অনুসন্ধান ও উত্তোলনে সব পদ্ধতিতে চেষ্টা চালাতে হবে। প্রয়োজনে সহায়তা নিতে হবে বিদেশি কোম্পানির।

বাপেক্স সূত্র জানায়, নির্বাচিত বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ প্রতিষ্ঠান গঠনের জন্য উৎপাদন বণ্টন চুক্তির আদলে একটি মডেল ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ধরা হয়েছে ব্রেন্ট ক্রুডের দামের ৭ শতাংশ। তবে এর জন্য ক্রুডের দাম ৭০ থেকে ৯০ ডলারের মধ্যে থাকতে হবে। বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে শিগগির এই মডেল চুক্তিপত্র জ্বালানি বিভাগের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। এরই মধ্যে আগ্রহপত্র যাচাই করে পাঁচটি কোম্পানির সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছে বাপেক্স। কোম্পানিগুলা হলো– অস্ট্রোলিয়ার ইনগাজ অ্যানার্জি, হংকংভিত্তিক কোম্পানি এমআইই হোল্ডিং করপোরেশন, পেট্রো চায়না, সিঙ্গাপুরের ইনভেনিয়ার অ্যানার্জি ও ভারতের অ্যাডভেন্ট অয়েল ফিল্ড সার্ভিস।

এ বিষয়ে বাপেক্সের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, পার্বত্য এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারের অনুমোদন পেলে আইওসিদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir