শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :
দৈনিক যুগান্তরের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি মো: মুমীদুজ্জামান জাহানকে দোতলায় নিয়ে চামড়া ছাড়িয়ে হাড় হাড্ডি ও হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ওরফে মামুনুর রশিদ লিযাকত। গত ২৫ মার্চ শনিবার বিকেলে তার বাড়িতে গিয়ে এ হুমকি দেয়। তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি গত ২৬ মার্চ রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহজাদপুর থানায় একটি জিডি করেন। ২৭ মার্চ সোমবার বেলা ১১টার দিকে শাহজাদপুর থানার এসআই মনজুর সঙ্গীয় পোর্স নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেন। এরপর এদিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে শাহজাদপুর থানার ডিউটি অফিসার এসআই তাহের জিডিটি এনট্রি করেন। জিডি নং ১৪৩২ তারিখ-২৭/০৩/২০২৩ইং। গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দৈনিক যুগান্তরের তৃতীয় পাতার দ্বিতীয় কমালে “শাহজাদপুর উপজেলা, কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা ইউএনও’র” শিরোনামে নিউজ প্রকাশের জের ধরে ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী এ হুমকি দেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাংবাদিক জাহানের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার সময় লিয়াকত আলী আমার বাড়ির সামনের সড়কে এসে ডাকাডাকি শুরু করে। তার ডাকে সাড়া দিয়ে আমি আমার বাড়ির তালাবদ্ধ কেচিগেট খুলে সামনের পাকা সড়কে গিয়ে দাড়াই।আমাকে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে বলে, আপনের ছেলে জাহান কত বড় সাংবাদিক হয়েছে তা আমি দেখে নেবো। তার এতো বড় সাহস সে আমার বিরুদ্ধে সোয়া কোটি টাকা লুটের নিউজ করে। আমি কোথায় কার কাছে থেকে সোয়া কোটি টাকা লুট করেছি তার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে না পারলে ওকে দোতলায় নিয়ে ওর চামড়া ছাড়িয়ে ফেলবো। হাড়হাড্ডি ও হাত-পা ভেঙ্গে গুড়া করে দেবো। আমাকে তো ও চেনে না চেনায়ে দেবো। যাতে আর জীবনে কারো বিরুদ্ধে নিউজ করতে না পারে। আপনে এর বিচার দিবেন। বিচার না দিলে অসুবিধা আছে। আমি ওকে কি করি তখন দেখবেন। এই বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শাহজাদপুর উপজেলা শাখার সদস্য ও দৈনিক যুগান্তরের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি মো: মুমীদুজ্জামান জাহান বলেন, শাহজাদপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী আমার বাবাকে বাড়ির সামনের রাস্তায় ডেকে নিয়ে বলে আমাকে উপজেলার দোতলায় তুরে নিয়ে গিয়ে চামড়া ছাড়িয়ে হাড়হাড্ডি ও হাত-পা ভেঙ্গে গুড়া করে দিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। এর কিছু সময় পর লিয়াকত আলী তার ০১৭১২-০১৪৫২৪ নং মোবাইল ফোন থেকে আমাকে ফোন দিয়ে রাগান্বিত কন্ঠে উচ্চ স্বরে বলে এ জাহান ভাই আমি কোনে কার কাছে থেকে সোয়া কোটি টাকা ডাকাতি করেছি তার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে না পারলে দেখে নেবো। ভুয়া নিউজ করা ছুটায়া ফালাবো। এ কথা শুনে আমি আমার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড চালু করি। লিয়াকত বিষয়টি বুঝতে পেরে হ্যালো হ্যালো বলে ফোন কেটে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর সে আবার ০১৬২৬-৮২৮৫২৫ নং মোবাইল ফোন থেকে কল দেয়। আমি ফোন রিসিভ করে কল রেকর্ড চালু করি। তখন সে বার বার জাহান ভাই জাহান ভাই বলে ফোন কেটে দেয়। এ ভাবে সে আমার মোবাইল ফোনে মোট ৫ বার কল দিয়ে হুমকি দেয়। আমি প্রাণ ভয়ে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের গ্রুপ ম্যাসেঞ্জারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে সকল সাংবাদিকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। এরপর সে আমাকে আর কল না দিয়ে আমার পিতা ও ছোট ভাই জনের নামে অন্য লোক দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমার পরিবারের সবাইকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। সেই থেকে আমি ও আমার পরিবারের সবাই প্রাণনাশের আশংকায় আতংকিত হয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাড়ি থেকে বাইরে যেতেও সাহস পাচ্ছি না। ফলে নিরাপত্তা চেয়ে শাহজাদপুর থানায় জিডি করি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, জিডি কপি হাতে পেয়েছি
। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: লিয়াকত আলীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে সাংবাদিক জাহানকে হুমকির ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন,শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম,সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু,শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিমল কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ,কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য সাজ্জাদ হায়দার লিটন,জহুরুল ইসলাম,মাইটিভির চৌহালি-বেলকুচি প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ,এনজিও কর্মকর্তা আবু বক্কার সিদ্দিক রিপন,সাংবাদিক আদিত্য রাসেল,শুভ্র চৌধুরী,ফারুক হাসান কাহার,জহুরুল ইসলাম, জহির রায়হান,সেলিম হোসেন,সোনা মিয়া,জুয়েল খান,কারিকুল ইসলাম,বেজাউল করিম,মো: সরোয়ারদী,হাসানুজ্জামান সুলতান,ইয়াসিন সরকার,কাফি হোসেন,কৃষ্ণ কুমার,ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান,সাংবাদিক রাজু আহমেদ,খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।