রফিকুল ইসলাম সবুজ:
‘‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন রে.., মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে..’’ গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় এই লোকসংগীতটি আজও মনে করিয়ে দেয় গ্রামীণ ঐতিহ্য বটবৃক্ষের কথা। সময়ের বিবর্তনে বট গাছের ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেলেও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী রহিমপুর ঈদগাহ মাঠে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে প্রায় শতবর্ষী বটগাছ। আর এই বট গাছের পাশেই সমাধিত রয়েছে রহিমপুর গ্রামের পূর্বপুরুষরা।
একটা সময় ছিল যখন বাড়ির সামনে, জমির কাছে ও বিভিন্ন জায়গায় বটগাছ দেখা যেত। গ্রামগঞ্জের মেলাও বসত বটবৃক্ষের নিচে। গ্রাম বাংলায় অনেক ক্ষেত্রে ঠিকানা নির্ধারণের জন্য ‘বটতলা’ বলে অভিহিত করা হতো বিভিন্ন স্থানকে। পথের কাছে, নদীর পাড়ে, হাটে অথবা জনবিরল স্থানে ডাল-পাতায় ভরা বটগাছ ছিল পথিকের বিশ্রামের জায়গা। যা মানুষ, পাখি, কীটপতঙ্গের অকৃত্রিম বন্ধু।
বর্তমানে প্রাচীন আমলের দুই-একটি বটগাছ চোখে পড়লেও অনেকাংশে মানুষের চলাফেরার সুবিধার্থে এগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে ছুটতে গিয়ে অনেক সময়ই মানুষ ভুলে যাচ্ছেন তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, একটি বটগাছ কাটার সঙ্গে সঙ্গে তিন শতাধিক প্রজাতির আবাস নষ্ট হয়।
তুলনামূলকভাবে এ গাছে পাতা বেশি। বসন্ত ও শরৎকালে নতুন পাতা গজায়। কচি পাতার রং তামাটে। বট গাছের মঞ্জরির গর্ভে খুবই ছোট এবং ফলের মতোই গোলাকার ফুল লুকানো থাকে। এক লিঙ্গিক ফুল পরাগায়ণের জন্য বিশেষ জাতের পতঙ্গের ওপর নির্ভরশীল। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে বটের ফল পাকে।
রহিমপুর গ্রামের প্রবীণ কয়েকজন মুরুব্বি জানান, ‘প্রতি বছর ইদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উপলক্ষে এই মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করি আমরা। উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়াবৃক্ষটি মানুষের অনেক উপকারে আসে।’