নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বরগুনায় ২০০ জনের বেশি জেলেসহ মাছ ধরা ১৫ ট্রলার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বরগুনা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, গভীর সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া ১৫ থেকে ২০টি ট্রলার ঘাটে আসেনি এবং তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। হয়তো তারা সুন্দরবনের কোথাও আশ্রয় নিতে পারে।
ট্রলার মালিক সমিতির এই নেতা জানান, গভীর সাগরে যাওয়া প্রত্যেকটি বড় ট্রলারে ১৪ থেকে ১৮ জন জেলে থাকে। সে হিসেবে অন্তত ২৪০ জন জেলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বরগুনার উপকূলে দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। কখনো ভারী আবার কখনো মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং বাতাসের তীব্রতায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বরগুনার পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর নদীতে এক দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার নিচে। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৯৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক এক জরুরি সভায় জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৩টি মুজিব কেল্লা, ৯ হাজার ৬১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ৪৩০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৯৬ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ২০০ পিস কম্বল মজুদ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ জানান, বিকেল ৩টার দিকে বরগুনায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টি বরগুনার উপকূল অতিক্রম করে চলে গেছে। তবে সঞ্চালনকারী মেঘমালার কারণে রাতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।