অনলাইন ডেস্ক:
ফ্যাশন সদা পরিবর্তনশীল। একই কথা খাটে করপোরেট ড্রেস কোডেও। এক যুগ আগেও অফিসপাড়ার মেয়েদের কেবল শাড়ি-কামিজে দেখা যেত। সেই ট্রেন্ডের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে করপোরেট ফ্যাশনও। ফুল ফরমাল থেকে স্মার্ট ক্যাজুয়াল সে কথাই বলছে। তবে ট্রেন্ডে যতই হাওয়া বদল হোক শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের আবেদন কিন্তু এখনো কমেনি। কেবল বদলেছে সময়ের সঙ্গে সাজ-পোশাকের পরিবর্তন।
শীত মৌসুম আরামের হলেও ত্বকের জন্য তা মোটেও সুখকর নয়। শীতে ত্বকের সাধারণ সমস্যার একটি হলো- ত্বকের শুষ্কতা। সংক্রামণে ত্বক লাল, খসখসে ও চুলকানি দেখা দেয়। কনুই, হাঁটু, নিচের অংশ এবং মাথার ত্বকেই বেশি দেখা দেয়। এর কারণ শুকনো বাতাস, শীতল তাপমাত্রা, সূর্যের আলো কম এবং দুর্বল হাইড্রেশন সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা শীতকালে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। উদ্দেশ্য, শীতের শুষ্কতা যেন ত্বককে আঁকড়ে না ধরে।
ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার রয়েছে আরও কিছু কারণ। এর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করা, বারবার মুখ ধোয়া কিংবা স্ক্রাবিং করা। এমন কারণগুলো শীত মৌসুমে বেশি দেখা যায়। আবার মুখ ধোয়ার পরে খসখসে কোনো কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছবেন না। মুখ পরিষ্কারের জন্য বেছে নিন প্রাকৃতিক ক্লিনজার। পাশাপাশি চড়া সুগন্ধযুক্ত কিংবা রংযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। আপনার যদি ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে তবে প্রিজারভেটিভযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়-
ত্বক থাকুক ময়েশ্চারাইজ : শীতল বাতাসে ত্বক হারায় প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা। ফলে ত্বক কোমল এবং নরম হয় না। লাল ভাব বা চুলকানি রোধ করতে ত্বক ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজ করতে হবে। গোসলের সময় সুগন্ধযুক্ত এবং রাসায়নিকমুক্ত ময়েশ্চারাইজিং সাবান বা জেল ব্যবহার করতে হবে। আর্দ্রতা ধরে রাখতে ঘন ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। খাঁটি অ্যালোভেরা জেল, নারকেল তেল, জলপাই তেল ইত্যাদিও ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখে।
ঠিকঠাক গোসল : শীতকালে গরম পানিতে গোসল ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা এবং তৈলাক্ততা কমিয়ে দিতে পারে। তাই শীতের সময়টাতে খুব বেশি গরম পানিতে গোসল না করে কুসুম গরম পানিতে গোসলই আদর্শ। ত্বকের মরা চামড়া দূর করে ত্বক সতেজ করতে গোসলের কুসুম গরম পানির সঙ্গে ওটমিল গুঁড়ো বা এপসোম লবণ দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করে নিন। ত্বকের এই ধরনের স্ক্রাবের ফলে ত্বকের মরা চামড়া দুর হয়ে যাবে।
পর্যাপ্ত পানি পান : শীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করার ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। যা শুষ্ক ত্বকের একটি বড় কারণ। এ ছাড়া পানি কম পান করলে দেহে টক্সিন জমে, ফলস্বরূপ ত্বকের শুষ্কতা বেড়ে সেরোসিস হয়। শুধু বাইরে থেকে ত্বক ময়েশ্চারাইজ করাই যথেষ্ট নয়। ত্বককে ভেতর থেকেও ভালোভাবে হাইড্রেটেড করতে হবে। দেহে পানির মাত্রা ধরে রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত পণ্য বেছে নিন। চর্বিযুক্ত খাবার এবং গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তাজা ফল এবং শাকসবজি রাখুন। খাবারের তালিকায় দুধ রাখুন। চিনির ব্যবহার কমান। সর্বোপরি ধূমপান এড়িয়ে চলুন। আরও যত প্রাকৃতিক সমাধান ত্বকের শুষ্কতা রোধে দারুণভাবে কার্যকরী। সেসবই জানব আজ-
শুষ্কতা বাড়ায় এমন প্রসাধনী যেমন- ম্যাট লিপস্টিক, পাউডার ব্লাশ ইত্যাদি ব্যবহার না করা। আর বাইরে বেরোনোর আগে আপনার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
মেকআপে কালার লিপবাম এবং আর্দ্রতা রক্ষাকারী ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা ভালো। এ ছাড়াও ক্রিম ব্লাশ এবং আর্দ্রতা রক্ষাকারী মিস্ট ব্যবহার ত্বককে কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
ঘরে তৈরি টোনার ও স্ক্যাব; যেমন- কয়েক ফোঁটা লেবু, গুঁড়া দুধ এবং গ্লিসারিনের মাস্ক ত্বকের জন্য উপকারী। সপ্তাহে দু-একবার ব্যবহারেও ত্বক হবে উজ্জ্বল।
অ্যালোভেরা জেল শুষ্ক ত্বককে গভীর থেকে আর্দ্র রাখে ও বাইরের অবস্থা থেকে সুরক্ষিত রাখে।
প্রসাধনীর পাশাপাশি ‘সাপ্লিমেন্ট’ও খেতে পারেন। মুখের সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন- তিসির বীজের ক্যাপসুল, প্রিমরোজ অয়েল ক্যাপসুল, কড লিভার তেলের ক্যাপসুল এবং ওমেগা ৩, ৬, ৯ ইত্যাদি খাওয়া ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করতে সহায়তা করে।