বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

যমুনা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ জাকিরের কান্ড! কলেজে না গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও বেতন উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: / ৩২৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪, ৮:৫৯ অপরাহ্ন



সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের যমুনা ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কলেজে না গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরসহ বেতন উত্তোলনের অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও বিগত সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকাকালীন কলেজের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। অন্যদিকে, যোগ্যতা না থাকলেও অধ্যক্ষ হবার লোভে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ ছাড়লেও কলেজের ব্যাংকিং হিসাব বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বুঝিয়ে দেননি। অভিযোগ রয়েছে, তার আপন ভায়রা আনোয়ার হোসেন ফারুক কলেজের সভাপতি হওয়ায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এসব অপকর্ম করছে। এসব অভিযোগের তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, জাকির হোসেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকাকালীন ২০২১ সালে অডিটের নামে শিক্ষকদের নিকট থেকে মূল বেসিকের ১৫% হান্ডক্যাশ ও বাড়ী ভাড়ার নামে মূল বেসিকের ২৫% টাকা নিয়েছে। কিন্তু অডিটের কোন চিঠি, আপত্তি অথবা নিষ্পত্তির কাগজপত্র অফিসে এখনও জমা দেননি। কোভিড-১৯ মাহমারির কারণে ২০২১সালের ফরমপূরণ বাবদ আদায়কৃত অর্থের অব্যয়িত অর্থ (কেন্দ্র ফি এবং বোর্ড ফি) ফেরত প্রদান করেছে রাজশাহী বোর্ড। কিন্তু জাকির হোসেন কলেজের কোন পরীক্ষার্থীকেই সেই টাকা ফেরত দেয়নি। ব্যাংক থেকে সে নিজেই টাকা উত্তোলনপুর্বক আত্মসাত করেছে। অথচ রাজশাহী বোর্ডের চিঠিতে পরিস্কার লেখা রয়েছে টাকা পরীক্ষার্থীকে ফেরত দিতে হবে। (বিজ্ঞপ্তির নম্বর: রাশিবে/উমা/পনি-২১২, তারিখ: ০৮/০৩/২০২১।) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্র তোয়াক্কা না করে নিজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকাকালীন অধ্যক্ষ প্রার্থী হয়ে, উপাধ্যক্ষ জাকির (সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) দৈনিক জনকন্ঠ ও যমুনা প্রবাহ পত্রিকায় ২৩/০৮/২০২৩ এবং দৈনিক জনকন্ঠ ও যমুনা প্রবাহ পত্রিকায় ২৪/০৯/২০২৩ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপত্রে একজন উপাধ্যক্ষ সর্বোচ্চ ৬ মাস ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। অথচ সে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ১০/১০/২০২০ খ্রি. তারিখে দায়িত্ব গ্রহন করে এবং গত ২৪/১০/২০২৩ খ্রি. তারিখে জাকির হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০২৩-২৪ সেশনের ছাত্র/ছাত্রীদের ভতি ও বেতনের রশিদ এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। জাকির হোসেন কলেজে যোগদান করার পর থেকে অদ্যবধি এইচএসসি ভর্তি ফরমের বিক্রির টাকা কলেজ ফান্ডে জমা দেয়নি। জাকির হোসেন কলেজে যোগদান করার পর থেকে অদ্যবধি টিউশন ফি কলেজ এ্যাকাউন্টে জমা হয় না। এতো অভিযোগ থাকার পরও হয়নি কোন তদন্ত। উল্টো সম্প্রতি অধ্যক্ষের পদ ছাড়লেও ক্ষমতার দাপটে দুর্নীতিবাজ, কলেজের অর্থ আত্মসাতকারী ও নারীলোভী জাকির হোসেন কলেজ করছেন না।


দুএকদিন পরপর নামমাত্র কলেজে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে আসেন। কলেজে তার রুম থাকলেও রুমে না বসে অধ্যক্ষের রুমে বসে অধ্যক্ষের কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এতো দাপটের একমাত্র উৎস তার আপন বড় ভায়রা কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি। সভাপতির দাপট দেখিয়েই তিনি কলেজে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ সাধারন শিক্ষকদের তটস্থের মধ্যে রাখছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে উপাধ্যক্ষ জাকির হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কলেজে না গেলেও কলেজের কাজের কারনেই আমাকে বাইরে বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজে বাইরে থাকতে হয়। বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতি অবহিত রয়েছেন। তিনি কথা প্রসঙ্গে বলেন, আমাকে তো কলেজের আকমলের মতো পিয়নের কাছ থেকে ছুটি নিতে হবে না। তবে আকমলের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, আকমল হোসেন ওই কলেজের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছে।

কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ জানান, উপাধ্যক্ষ জাকির হোসেন মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন না। তবে তিনি বিষয়টি আমাকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেন। কিন্তু তিনি ছুটি নেন কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, কাগজে কলমে ছুটি তিনি নেন না। শুধু মৌখিকভাবে অবহিত করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিপত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়োগ প্রদানের সাত কর্ম দিবসের মধ্যে কলেজের সকল কাগজ-পত্র ও বাংকিং পাওয়ার হস্তান্তরের কথা থাকলেও আড়াইমাস পেরিয়ে গেলেও ব্যাংকিং পাওয়ার আমাকে দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন।






আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir