বাবা মানে স্নেহ, ভালোবাসায় আগলে রাখার এক মহান ব্যক্তিত্ব। বাবা মানে হৃদস্পন্দন, আস্থা, নির্ভরতা ও ভালোবাসার শেষ আশ্রয়স্থল। বাবা সন্তানদের জন্য অমূল্য সম্পদ। আমরা মনে করি বাবা মানেই রাগী এক মানুষের নাম। যে কারণে অনেক সময় মুখফুটে বাবাকে ভালোবাসি কথা টুকুও বলা হয়নি। বাবাকে নিয়ে সন্তানের জমে থাকা নানা ধরনের অনুভূতি ও স্মৃতিচারণ জানতে চাওয়া হয়েছে কিছু তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে। সেসব শুনে পাঠকের জন্য উপস্থাপন করছেন মো. জুবাইল আকন্দ…
‘বাবা’ ভালোবাসি তোমাকে
ভালোবাসি কথাটি যাকে চাইলেও বলা হয়ে উঠে না তিনি হলেন বাবা। বাবা তার সন্তানদের পরম ভালোবাসা ও আদরে লালন করেন। সামনে রাগী রাগী দেখা গেলেও ভিতরে যে ভালবাসা সঞ্চয় করেন তিনিই আমার বাবা। সন্তানের ভালোর জন্য নিজের শেষ সম্বল টুকু দিতে যিনি দ্বিধা করেন না তিনি হলেন আমার বাবা। যাকে আঁকড়ে ধরে জীবনটা স্বাচ্ছন্দে কাটিয়ে দেওয়া যায় তিনিই হলেন আমার বাবা। মায়ের ভালোবাসাটা দেখা গেলেও বাবার ভালবাসাটা থাকে অদৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু প্রতিনিয়ত যে অন্তরে ভালোবাসা লালন করে থাকেন তিনি হলেন বাবা। শত কষ্টের কষ্টের মাঝে যে মুখ ফোটে কোনদিন বলবে না “কষ্ট হচ্ছে”তিনি হলেন আমার বাবা। জীবনের চাওয়া-পাওয়া বিসর্জন সন্তানের মুখে হাসি ফোটান তিনি হলেন আমার বাবা। লোকে বলে, বাবা হলো একটি ছায়ার মত। যিনি তার সন্তানদের বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে আগলে রাখে। যে কোনদিন তার সন্তানকে ছায়া থেকে বঞ্চিত করবে না। তার ছায়া পাবার সৌভাগ্য যে বেশিদিন পায়নি, সেই বুঝবে বাবা না থাকার কষ্টটা। আমরা সন্তানরা কখনো বাবাকে ঐভাবে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই না। অনেক সন্তান আছে যারা বাবাকে সামান্য শ্রদ্ধা ও সম্মান থেকেও বঞ্চিত করে। যে নিজে না খেয়ে সন্তানের চাহিদা পূরণ করে বড় করেছেন তার প্রতি এমন অবিচার করা উচিত নয়। বাবা বিধাতার এক বড় নিয়ামত যাকে যত্ন করতে হয়। মমতার সর্বোচ্চ চূড়ায় যদি মায়ের অবস্থান হয় তবে বাবার স্থানও কোনো অংশে কম নয়। সবার মত আমিও আমার বাবাকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু কখনও বলা হয় নি। আমার বাবার অনুপ্রেরণা আমার জীবনে আশীর্বাদের মতো কাজ করেছে। বাবার একটা কথার কারণে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি থেকে উঠে দাঁড়াতে পেরেছি। বাবা নামক এক বিশাল মমত্ব আমাদের প্রতিনিয়ত লালন করা উচিত। আজ বিশ্ব বাবা দিবসে সারা বিশ্বের সকল বাবার প্রতি পরম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভাল থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা।
মোসা. আফরিনা আক্তার
শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ।
বাবা আমার সুপার ম্যান
কর্মজীবনে পা দিয়েছি আজ মাত্র সাতদিন তাও খণ্ডকালীন এতেই কেমন অগোছালো হয়ে পরেছি। অথচ আমার বাবা আমার জন্মের আগে থেকেই কর্মজীবনে পা রেখেছিল। কখনও আমি তাঁকে হাঁপিয়ে যেতে দেখিনি। আমার চোখে সুপারম্যান, আমার আইডল বাবা যাকে কখনও ভেঙ্গে পরতে দেখিনি। প্রতিটা সন্তানের বটবৃক্ষ বাবা, কঠিন ঝড়ে টিকে থাকা শেষ আশ্রয়স্থলটির নাম বাবা। পিতা-মাতার যেমন সন্তানকে ভালোবাসার কোনো দিবসের দরকার পরে না। তেমনি পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান জানাতে নির্দিষ্ট দিনের দরকার পরে না। বাবা হলো উত্তাল সমুদ্রের বুকে ভাসমান জাহাজ যার বুকে আমরা নিরাপদে সুরক্ষীত থাকি। বাবা প্রতিটি সন্তানের জন্য অমূল্য সম্পদ। বাবা নামক বটবৃক্ষ, ছায়া হয়ে পাশে থাকলে মনে হয় যেন বিশ্বটা জয় করা খুবই সহজ। বাবা হচ্ছে একজন সন্তানের উন্নতির শিখড়ে পৌঁছানোর জন্য সিড়ি। আর্থিকভাবে, মানসিকভাবে, প্রেষণামূলকভাবে, সাহস ও উৎসাহ পাওয়ার একটা শক্তি। বাবা এমন একজন মহান পুরুষ যে নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে দিন-রাত পরিশ্রম করে যান। পরিবার ও সন্তান-সন্তুতিদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে। হতদরিদ্র বাবা নিজে না খেয়ে ছেলেমেয়েদের খাওয়ায়, নিজে ভালো জামা-কাপড় না পড়ে ছেলেমেয়েদের পড়ায়। তাই বাবা দিবসে একটাই চাওয়া কোন বাবা যেন বৃদ্ধাশ্রমে না থাকে। পৃথিবীর সকল সন্তানদের বাবার সাথে দৃঢ় সম্পর্ক অটুট থাকুক। বাবারা ভালো থাকুক আপন নীড়ে।
মো. আরিফুল ইসলাম আকাশ
শিক্ষার্থী, ঝালকাঠি সরকারি কলেজ, ঝালকাঠি।
বাবা মানে বটবৃক্ষ
বাবা পৃথিবীর সবচেয়ে সৎ ও দায়িত্বশীল মানুষ। প্রতিটি সন্তানের কাছে রিয়েল হিরো তাঁর বাবা। বাবা এক আবেক, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার নাম। জন্ম হতে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আস্থা ও ভরসার নাম বাবা। প্রতিটি বাবার প্রত্যাশা তাঁর সন্তান থাকে দুধেভাতে। একজন মানুষরের সবগুলো অর্জনে যে দুজন মানুষ সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন তাঁরা হলেন বাবা মা। ঈদ, পূজো বা যে কোন উৎসব আয়োজনে সন্তানকে দামী পোষাক কিনে দিয়ে নিজে পূরাতন পোষাকে উৎসব উদযাপন করা মানুষটি বাবা। সন্তানের ভালোর জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করেন এমন একজন ব্যাক্তিই হলো বাবা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ভাবে বাবা দিবস উদযাপিত হয়। আমাদের অনুভূতি ও ভালোবাসার কথাগুলো বাবা কে বলা হয়না। এই দিবসে একটিই চাওয়া কোনো বাবাকে যেন বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে না হয়। জীবনের সবটুকু দিয়ে বাবারা যেমন সন্তানের ভালো চান, সন্তাদের উচিত প্রতিটি বাবাকে তাঁর যথাযথ মর্যাদা দেওয়া। বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের যত্নশীল হওয়া উচিত। পৃথিবীতে সকল বাবা ভালো থাকুক। বাবা দিবস সার্থক হোক।
আল – আমিন
শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
“বাবা ভুলের পাঠ চুকিয়ে, ভালোবাসা, সন্মান
দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দিতে চাই”
জীবনে বাবার গুরুত্ব অপরিসীম। “বাবা” মাত্র দুটি শব্দ। কিন্তু এর বিশালতা অনেক বড়। বাবা হলেন তপ্ত রোদের শীতল ছায়া মতো। আমাদের জন্মের পর থেকেই নিঃস্বার্থভাবে যিনি সকল চাহিদা পূরণ করতে থাকেন তিনি হচ্ছেন প্রিয় বাবা। সেই নিঃস্বার্থ বাবাকে নিয়ে বলার মতো কোন উদাহরণই পৃথিবিতে আছে বলে আমার মনে হয় না। বাবা দিবসকে কেন্দ্র করে বাবাকে নিয়ে কিছু শব্দের গাঁথুনিতে স্মৃতিচারণ করা যতটা সহজ, তাঁর চেয়ে বেশি কঠিন জীবন থেকে বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে বাবাকে উপলব্ধি করা। একজন বাবা সারাটাজীবন কষ্টের বোঝা, বুকে-পিঠে-মাথায় নিয়ে নিঃস্বার্থভাবে সবার সুখের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। সংসার আর সন্তানদের জন্য পরম মমতার আশ্রয়ের বটবৃক্ষ হয়ে থাকেন একমাত্র বাবা। লুকিয়ে রাখা বাবা’র না বলা “কথার পাণ্ডুলিপি” তখনই পড়তে পারি, যখন বিবেকের আদালতে নিজেকে বাবার জায়গায় ভাবি। সবার মতো আমার জীবনে বাবার অবদান কতটা, যতই বড় হচ্ছি ততই টের পাচ্ছি। তবুও এই দিবসকে কেন্দ্র করে বলবো-বাবা ভুলের পাঠ চুকিয়ে, তোমাকে মায়া-মমতা, ভালোবাসা, সম্মান, দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দিতে চাই।
নুসরাত জাহান জেরিন
শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
বাবা মানে স্বস্তিতে বেঁচে থাকা
বাবা শব্দটা দুই অক্ষরের কিন্তু এর ভেতরে রয়েছে গহীন হৃদয়ের স্পন্দন। বাবা বেঁচে থাক প্রত্যেক সন্তানই চায়। কারণ বাবা নামে মানুষটা বটবৃক্ষের মতো। যে বৃক্ষের ছায়া সন্তানের জন্য মঙ্গলময়। বাবা ছোট বেলায় থেকেই আদর, স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে বড় করেন সন্তানদের। তবে আমি মনে করি পৃথীবির সকল বাবাই মিথ্যাবাদী। কেন জানেন, বাবা যখন কর্মে যায় তখন আপনি যদি বলেন বাবা তুমি খেয়েছো অপর পাশ থেকে না খেয়েই বাবা বলবে আমি খেয়েছি, কষ্ট করেও হলে সন্তানের চাহিদা পুরন করে। আমাদের মাথার উপর থেকে যখনি বাবা নামক বৃক্ষটি হারিয়ে যায়। সন্তানের জীবনে নেমে আসে দুঃখ। বটবৃক্ষ না থাকলে যেমন পথচারীরা আরাম করতে পারেনা। তেমনি বাবা হারা সন্তানরাও একটু স্বস্তিতে থাকতে পারেনা। বাবা হারা সন্তানদের সব ঝড়বৃষ্টি-রোদ মোকাবিলা করে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হয়। এটাই বাস্তবতা। তবে কখনো বলা হয়নি বাবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। সত্যি বাবা তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। বাবা দিবসে সকল বাবার প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ভালোবাসা।
লিমন হোসেন,
শিক্ষার্থী, ইসলামিয়া সরকারি কলেজ, সিরাজগঞ্জ।
বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ
বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাবা মানে সকল আশা-ভরসা, আদর-স্নেহ, ভালোবাসা, আর পরম নির্ভরতার নাম। অসংখ্য গুণাবলি দিয়ে আল্লাহতায়ালা শ্রেষ্ঠ নেয়ামত বাবাকে নির্ধারণ করে সন্তানকে দিয়েছেন। বাবা হলেন একটি গ্রহের উপরের অংশ যে নিজে পুড়ে সন্তানদের ছায়া দেয় কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলে না। হযরত মুহাম্মদ (স:) বাবার মর্যাদা সম্পর্কে বলেছেন, ‘বাবার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হন। জুন মাসের তৃতীয় রোববার প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় বাবা দিবস। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই দিবসটি পালন করা শুরু হয়েছে। বাবা আমাদের পরিবারের আর্থিক চাহিদা পূরণ করেন। তিনি আমাদের ভাইবোনদের স্নেহ, মমতা আর শাসন দিয়ে বড় করে তুলেন। প্রায় বাবার উপার্জন সীমিত। তিনি সে অর্থ দিয়েই সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করেন। সন্তানরাও এতে সন্তুষ্ট।রযিনি পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে এবং সকল সুখ বিসর্জন দিয়ে শুধু মাত্র সন্তানদের মানুষ করতে অসাধ্য সাধন করে তিনিই বাবা।
আব্দুর রহিম
শিক্ষার্থী,বাশঁখালী ডিগ্রী কলেজ।
টিপিএন২৪/ আর এইচ হৃদয়