শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ অপরাহ্ন

ফিলিপাইনের আখ চাষে সফল সিংড়ার সাগর

নাসিম উদ্দীন নাসিম / ৮৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:৩৪ অপরাহ্ন


জমি লিজ নিয়ে কখনো ধান, কখনো গম, ভুট্টা আবার কখনো সবজি চাষ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে না পারলেও এবার এলাকায় প্রথমবারের মত ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের আখ চাষ করে সফল হয়েছেন সাগর নামের এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। ১ বিঘা জমি থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রয় করেছেন তিনি। এতে খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তাঁর এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। ২৮ বছর বয়সী এই তরুণ কৃষি উদ্যোক্তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া পৌরসভার দক্ষিণ দমদমা এলাকায়।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের রঙ কিছুটা কালো ও খয়েরি। দেশীয় আখের মতো হলেও রয়েছে বেশকিছু ভিন্নতা। এ আখের কান্ড নরম, রসের পরিমাণ বেশি, মিষ্টিও বেশি। লম্বায় সাধারণত ১২ থেকে ১৬ ফুট হয়ে থাকে। জৈব সার আর গোড়ায় পানি রাখলে দ্রুতই বেড়ে ওঠে। কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। তুলনামুলক কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এ জাতের আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

সরেজমিনে সিংড়া পৌরসভার দক্ষিণ দমদমার বালু চরের মাঠে কৃষি উদ্যোক্তা সাগরের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে বর্ষাকালীন রোপা আমন ধানের মাঝে এক বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের লম্বা আখ। এ জমির প্রায় ৯০ শতাংশ আখ ইতোমধ্যে বিক্রয় করেছেন তিনি।

উদ্যোক্তা সাগর জানায়, আমার নিজের কোন জমি নাই। তিন বছরের জন্য ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আখের চাষ করেছি। সেই হিসেবে প্রতি বছর ২২ হাজার টাকা লিজ খরচসহ অন্যান্য খরচ হয়। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রয় করেছি। এতে খরচ বাদে আমার আয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এখনো ১৫ হাজার টাকার আখ বিক্রয়ের আশা করছি। তিনি জানান, আখ চাষে প্রথম বছর চারা রোপণ বাবদ খরচ বেশি পড়ে। তাই প্রথম বছর লাভের হিসাবটাও হয় কম। জমিতে একবার চারা রোপন করলে তিন বছর ফসল পাওয়া যায়। সেই হিসেবে আগামী দুই বছরে কম খরচে লাভের হিসেবটা হবে বেশি। এ কারণেই এ জমি থেকে তিন বছরে গড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

সাগর আরও জানায়, আখ চাষের আগে ধান, গম, ভুট্টা ও নানা রকম সবজি চাষ করে তেমন লাভ করতে পারিনি। গতবছর নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের চারা সংগ্রহ করে এ জমিতে রোপন করি। জমিতে আমার বাবাই সময় দেন বেশি। আগামীতে জমির পরিমাণ আরো বাড়াবেন বলে জানান তিনি। এদিকে প্রথম বছরেই সাগরের এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। অনেকেই আসছেন তার জমিতে। নিচ্ছেন পরামর্শ। সাগরের কাছ থেকে এ জাতের চারা নিয়ে আখের চাষ শুরু করেছেন কেউ কেউ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ জানান, আখ চাষের জন্য নাটোর জেলা বিখ্যাত হলেও সিংড়া উপজেলায় তুলনামুলক এ ফসল চাষের চাহিদা কম। এ বছর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন। আমরা আশা করছি, আখ চাষীরা লাভবান হবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir