নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার দহকুলা গ্রামের বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়া (৮০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)। বৃদ্ধার অসুস্থ্য মেয়ে সালমা খাতুনের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করায় পুত্রবধু নাজমা খাতুন ও তার ছেলে পরিকল্পনা করে শ্বাসরোধে বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়াকে হত্যা করা হয়।
হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত পুত্রবধু নাজমা খাতুন (৫৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ভিকটিম মোমেনা বেওয়ার স্বামীর মৃত্যু পর পুত্রবধু নাজমা খাতুন ও নাতিদের সঙ্গে বসবাস করতেন। বৃদ্ধ মোমেনা বেওয়ার নামে কিছু জমি ছিলো। উক্ত জমি বিক্রি করে তার অসুস্থ্য মেয়ে সালমা খাতুনের চিকিৎসায় ব্যায় করেন। এছাড়া পুত্রবধু নাজমা খাতুন অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই দুটি ঘটনা নিয়ে পুত্র বধু ও নাতিদের সঙ্গে বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়ার মনোমানিল্য হয়।
এরই জেরে বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়ার হত্যার পরিকল্পনা করে পুত্রবধু ও নাতিরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৭ মে রাতে বৃদ্ধা মোমেনা বেওয়াকে শ্বারোধে হত্যা করে পড়নের শাড়ি দিয়ে ঘরের মধ্যে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে। পরে আত্নহত্যা করেছে মর্মে প্রচার চালায় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে। এঘটনায় বৃদ্ধার মেয়ের জামাই মাহবুবুল আলম বুলু বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ময়না তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় বৃদ্ধ মোমেনা বেওয়াকে শ্বারোধে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রাপ্তির পর নিহত মোমেনা বেওয়ার আরেক নাতী আমিরুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। দীর্ঘ ২ বছর ৯ মাস তদন্ত চলাকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নিহতের পুত্রবধু নাজমা খাতুনকে ঢাকার শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গত ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।