পুলিশের এক ওসির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও তাকে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় এবং কর্মক্ষেত্রে স্বপদে বহাল থাকার পরও তাকে গ্রেফতারের কোনো প্রকার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পুলিশ। তাড়াশ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন মামলার বাদী মোছা: আম্বিয়া খাতুন (৪১)। তার অভিযোগ মামলার আসামী পুলিশের চাকুরীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করায়, পুলিশ তাকে সহানুভূতি দেখাচ্ছে। তিনি বারবার থানায় গিয়ে আসামী কে গ্রেফতারের অভিযোগ জানালেও পুলিশ নানা অজুহাতে তাকে হয়রানী করছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা মো: আবুল হোসেনের মেয়ে মোছা: আম্বিয়া খাতুনের বিয়ে হয় একই উপজেলার দিঘী সগুনা গ্রামের মৃত: কোরবান আলীর ছেলে মো:ছাইদুর রহমানের সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। মো: ছাইদুর রহমান বর্তমানে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
বিয়ের কিছু দিন পরেই যৌতুকের দাবিতে আম্বিয়া খাতুনের উপর নেমে আসে নানামাত্রিক নির্যাতন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে অনেক দেনদরবারও হয়। ২০১৯ সালের ১২ জুন নির্যাতনের মাত্রা বেরে যাওয়ায় আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে তার স্বামী ও দুই ভাসুরের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ একটি মামলা দায়ের করেন।
এ সময় চতুর বিবাদীরা নিরুপায় দেখে বাদী শান্তিপূর্ণ ঘর সংসার করার শর্তে রাজী হয়ে আপোস মিমাংসা করে নেয়ায়, বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু মামলা প্রত্যাহারের পরপরই আম্বিয়া খাতুনের উপর পুনরায় নেমে আসে অত্যাচারের খড়গ। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠিত হয়ে আবারও ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে আম্বিয়া খাতুনর বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালত গত ৯ জানুয়ারি আসামী মো: ছাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু এ ঘটনার ৬ মাস পার হলেও তাড়াশ থানা পুলিশ আসামী কে গ্রেফতার করছেনা মর্মে মামলার বাদী মোছা: আম্বিয়া খাতুন অভিযোগ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার উপপরিদর্শক মো: আব্দুস সালাম বলেন, আসামী এলাকায় না থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। আসামী জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত আছেন মর্মে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তিনি তার সদুত্তোর দেননি ।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। ঘটনাটি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মামলার বাদী মোছা: আম্বিয়া খাতুন বলেন, তিনি পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন না, আসামী পুলিশের ওসি হওয়ায় পুলিশ তাকে সহানুভূতি দেখাচ্ছে। পাল্টা আসামী পক্ষ তাকে বারবার হুমকী দিচ্ছে মামলা তুলে নেয়ার। ফলে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
মুঠোফোনে কথা হয় মামলার ১ নং আসামী ও আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ছাইদুর রহমানের সাথে। তিনি নিউজ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বিষয়টি পারিবারিক। মিমাংসার চেষ্টা চলছে।