মোংলা থেকে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশি পর্যন্ত নৌ রুটের নাব্যতা উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। চারটি লটের সংরক্ষণ ড্রেজিংয়ের কাজটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর মাধ্যমে করাতে চায় মন্ত্রণালয়। এতে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬২ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ‘অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আগামী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের ডিপিপি-তে ডব্লিউ ডি-২ প্যাকেজের আওতায় ১৬০ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার এলাকা সংরক্ষণ ড্রেজিং করা হবে। ক্রয় পরিকল্পনায় ডেজিংয়ের কাজটি চারটি লটে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির মাধ্যমে এককভাবে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর মাধ্যমে করানোর কথা বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আলোচ্য প্রকল্পটির মূল ডিপিপি অনুযায়ী, ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও সংরক্ষণের আওতায় সাড়ে ৩ কোটি ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের নৌপথটি খুবই স্পর্শকাতর এবং পরিবর্তনশীল মোংলা-ঘষিয়াখালী, পদ্মা/ গঙ্গা, মেঘনা, কচাসহ বিভিন্ন নদীর প্রত্যন্ত দুর্গম ও চরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গম চরাঞ্চল এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবাহিত পরিবর্তনশীল প্রমত্তা পদ্মা/ গঙ্গা নদীর ড্রেজিং কাজে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী ইতোমধ্যে বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ ও নৌ পরিবহন কাজে পারদর্শী এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী ও স্পর্শকাতর মালামাল পরিবহনে নিরাপত্তার বিষয়টিও তারা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখেন। এসব বিবেচনায় মোংলা থেকে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশি পর্যন্ত নৌ রুটের নাব্যতা উন্নয়নের কাজটি সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর মাধ্যমে করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। সূত্র মতে, উল্লেখিত ডেজিং কাজটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ কর্র্তৃক নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এমতাবস্থায় ড্রেজিংয়ের কাজটি বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর দ্বারা সম্পাদন করা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মোংলা থেকে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশি পর্যন্ত নৌ রুটের নাব্যতা উন্নয়ন প্রকল্পটি শতভাগ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা হচ্ছে ৮ বছর (২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত)। গত ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা।