রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকাকে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিবেচনায় রাখার অনুরোধ করেছে মস্কো

রিপোর্টারের নাম / ১৭৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১:০৬ অপরাহ্ন

নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত রাশিয়ান জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মস্কো। সেখানে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনায় রেখে ঢাকাকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন।

মস্কোয় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলব প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, আমাদের রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, আমরা রিপোর্টটি পেয়েছি। ওখানে রাশিয়ার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে কোনো জাহাজের কথা বলা হয়নি। নিষেধাজ্ঞাভুক্ত ৬৯টি জাহাজকে কেন বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না সে সম্পর্কে তারা তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে।

সেহেলী সাবরীন জানান, রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনায় রাখার অনুরোধ জানান। তিনি এ ঘটনায় রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়টি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। কেন জাহাজকে ভিড়তে দেওয়া হয়নি, সে প্রসঙ্গে তাদের অবহিত করেছেন রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশি দূতকে ডেকে যে বার্তা দিয়েছে মস্কো, সেটি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বার্তার বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা পরে গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানান মুখপাত্র।

সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না

রাশিয়ার জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী। তার ভাষায়, আমাদের বোঝাপড়া এতটাই ভালো যে আমরা মনে করি না জাহাজের একটি বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে।

মুখপাত্র বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে রাশিয়ার ভূমিকা আছে। জাতিসংঘে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে গৃহীত প্রস্তাবে আমাদের পক্ষে রাশিয়ার সমর্থন ছিল। সেটা একবার না দুই দু’বার ছিল। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি তখনও কিন্তু গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশ-রাশিয়া একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।

সেহেলী সাবরীন বলেন, জাহাজ সম্পর্কিত সমস্যাটি ছয় সপ্তাহের আগের। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি। সুতরাং আমরা মনে করি, আমাদের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।

রাশিয়ার সেই জাহাজটি অন্য দেশেও ভিড়তে না পারার প্রসঙ্গে মুখপাত্র সেহেলী বলেন, যে জাহাজটিতে মালামাল আসতে পারেনি, সেটি কিন্তু শুধু বাংলাদেশের বন্দরে অবতরণ করতে পারেনি তা নয়। সেটি তারা (রাশিয়া) অন্য গন্তব্যে আরও অনেক দেশে অবতরণ করতে চেয়েছিল কিন্তু তারা (রাশিয়া) সেটা পারেনি। সুতরাং এটা শুধু আমাদের ক্ষেত্রে নয়।

রাশিয়ার জাহাজগুলোতে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক নয়; যুক্তরাষ্ট্রের। সুতরাং বাংলাদেশ কেন এটি মানছে এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো কিন্তু একই পদক্ষেপ নিয়েছে। উরসা মেজরের পর আরও রাশিয়ার জাহাজ কিন্তু বাংলাদেশে এসেছে, সেগুলো নিষেধাজ্ঞা বহির্ভূত জাহাজ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বাণিজ্য নির্ভর দেশ। আমরা কিন্তু বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান রাখছি এবং আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সবার সঙ্গে একটি সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিতের জন্য কাজ করছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ৮০ পারসেন্ট এক্সপোর্ট আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir