নির্ধারিত কোটা পূরণ না হওয়ায় চলতি বছর হজে যেতে নিবন্ধনের সময় তৃতীয় দফায় বাড়ানো হয়েছে। নয় দিন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধন করা যাবে। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
নিবন্ধন ভাউচার প্রস্তুতের পরবর্তী দুই কার্যদিবসের মধ্যে অর্থ ব্যাংকে জমা দিয়ে নিবন্ধন নিশ্চিত না করলে উক্ত ভাউচার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়। আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব ব্যাংককে অফিস সময়ের পরও প্রস্তুতকৃত ভাউচারসমূহের অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের শাখাসমূহ খোলা রাখার জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়
আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব ব্যাংককে অফিস সময়ের পরও প্রস্তুতকৃত ভাউচারসমূহের অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকের শাখাসমূহ খোলা রাখার জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম তার দপ্তরে ঢাকা পোস্টকে জানান, আশা করছি এবারের বর্ধিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কোটা পূরণ হয়ে যাবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজযাত্রী প্রাক-নিবন্ধন সিস্টেমের হিসাব অনুযায়ী, সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেসরকারিভাবে মোট প্রাক-নিবন্ধন করেছেন ৫০ হাজার ১৯৩ জন এবং সরকারিভাবে প্রাক-নিবন্ধন করেছেন নয় হাজার ৯৯ জন। এখন পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ৫৯ হাজার ২৯২ জন। কোটা পূরণে এখনও বাকি আছেন ৬৭ হাজার ৯০৬ জন।
আশা করছি এবারের বর্ধিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কোটা পূরণ হয়ে যাবে
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম
বর্ধিত নয় দিনের মধ্যে বাকি ৬৭ হাজার হ্জযাত্রী পাবেন কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে মতিউল ইসলাম বলেন, ‘আগের বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি একদম শেষ সময়ে বেশি নিবন্ধন করেন হ্জযাত্রীরা। এজেন্সিগুলো অপেক্ষায় থাকে শেষ সময় সর্বোচ্চ বাড়ি ভাড়ার রেট দেখে নিবন্ধন করতে। আজ সময় বাড়ানোর যে প্রজ্ঞাপন হবে সেখানে এটাই শেষ সময় বলে উল্লেখ থাকবে। তাই ইচ্ছুক হজযাত্রীরা এবার নিবন্ধন করে ফেলবেন, আশা করছি।’
২০২৩ সালে হজে যেতে ইচ্ছুক দুই লাখ ৪৯ হাজার ২২৪ জন প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন আট হাজার ৩৯১ জন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন দুই লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজে বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া বেড়েছে ৪০ শতাংশেরও বেশি
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাক-নিবন্ধনকারীদের হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের শেষ তারিখ ছিল গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। প্রথম দফায় এ মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু কোটা পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজে বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়া বেড়েছে ৪০ শতাংশেরও বেশি। মক্কা-মদিনায় বাড়ি-ভাড়া ও তাঁবুর খরচ বেড়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।