বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন

বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য চাইলেন সালমান এফ রহমান

রিপোর্টারের নাম / ১৮১ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক ক্রেতাদের চাপে অর্থ খরচ করে অনেক উদ্যোগ নিতে বাধ্য হলেও বাংলাদেশের উৎপাদকরা সেই তুলনায় পণ্যের দাম পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। নর্ডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এনসিসি) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। তৈরি পোশাকের আবর্জনা রিসাইক্লিং নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের কাঠামোগত উন্নয়ন, অগ্নিনিরাপত্তা উন্নয়ন, শিশু শ্রমিক মুক্তকরণসহ নানা ইস্যুতে ভয়াবহ চাপ এসেছে। আমরা সবকিছু করছি। এসব করতে অনেক টাকা লাগে, অনেক বিনিয়োগ লাগে। কিন্তু ক্রেতারা এসে যখন দরদাম করে, তখন আমরা মূল্যটা পাই না। আপনাদের মান বজায় রাখতে যে সমস্ত কাজ আমাদের করতে হয়, যে পরিমাণ বিনিয়োগে আমরা বাধ্য হই, সেই বিবেচনায় আমরা প্রত্যাশা করি আপনাদের উচিত আমাদের পুরস্কৃত করা এবং অন্তত গ্রহণযোগ্য দামটা আমাদের দেয়া।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্য করে সালমান এফ রহমান বলেন, খুবই কম লাভের হার নিয়ে কাজ করছে পোশাক শিল্প এবং সেটা সঙ্কুচিত হয়েছে মহামারির আগে-পরে। নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতদের উপস্থিতিতে আমি এই সুযোগটা নিতে চাই যে, এটা আপনারা আপনাদের যেসব কোম্পানি ব্যবসা করতে আসে, তাদের বলতে পারেন, বিশেষ করে ন্যায্যমূল্যের বিষয়টি। এই মুহূর্তে দামের হার উৎপাদকদের জন্য খুব একটা ন্যায্য নয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে সালমান এফ রহমান বলেন, ইউরোপ যুদ্ধ করছে আর নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য কারণে পৃথিবীর অন্য সব দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  যুদ্ধের পর ইউরোপ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলছি এবং প্রতিশ্রুতির কথা বলছি। কিন্তু যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকটের ফলে ইউরোপ সুবিধা বুঝে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা ভুলে গেছে এবং ফিরেছে কয়লা বিদ্যুতে ও অন্য অনেক ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের মতো দূরের দেশ বিস্মিত যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে তোমাদের প্রতিশ্রুতি কী রকম। আমরা কি তেমন মানের কথা বলছি, যা এক অংশের জন্য প্রযোজ্য আর অন্য অংশের জন্য প্রযোজ্য নয়? ঢাকায় সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ড্রা বার্গ ফন লিন্ডে অনুষ্ঠানে বলেন, তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস হওয়ার কারণে বাংলাদেশকেও রিসাইক্লিংয়ের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।  এটা কেবল পরিবেশ ও জলবায়ুর স্বার্থে নয়, অর্থনৈতিক সুযোগও। এর মাধ্যমে হতে পারে নতুন খাতে সূচনা।

ঢাকায় তিন নর্ডিক দেশ সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্ক দূতাবাসের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছিল অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক। সুইডিশ কোম্পানি এইচ অ্যান্ড এমসহ বিভিন্ন পোশাক ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক খুচরা বিক্রেতা এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপ, ইকিয়া, লিন্ডেক্স এবং সুইডেন ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্ট কাউন্সিলের সমন্বয়ে গঠিত ‘সাসটেইনেবল ফ্যাশন প্ল্যাটফর্মের’ পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন, নরওয়ে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সিলইয়ে ফিনেস ওয়ানেবু, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী, এনসিসিআই সভাপতি তাহরিন খান ও নির্বাহী পরিচালক মাশরুর রহমান আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir