সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন

উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

রিপোর্টারের নাম / ১৯০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩, ১:২৩ অপরাহ্ন

উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের সক্ষমতা বৃদ্ধি, নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিনিময় ও আঞ্চলিক যৌথ গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য নতুন একটি প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। আগামী একনেক সভায় এই প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)  নামের এই প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা, ৫৫ শতাংশ জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার, বাকি ১ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা, ৪৫ শতাংশ ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক, যা সুদে আসলে পরিশোধ করতে হবে। ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে।  ঋণের ওপর বার্ষিক পরিশোধ করতে হবে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং এক দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ।

প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে চলতি জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পে দুই শতাধিক জনবল নিয়োগ করা হবে, যার বেশির ভাগই প্রেষণে নিয়োগ পাবেন।

ইউজিসির কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো শিক্ষিতদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি। বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ প্রায় ৩৯ শতাংশ ও কলেজ হতে স্নাতক ও পাস কোর্স সম্পন্ন ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী চাকরির সুযোগ পাচ্ছে না। এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নারীদের উন্নয়নের  সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারি পরিস্থিতিতে শিক্ষাক্ষেত্রে যে অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষিতদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টিসহ বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের হার বৃদ্ধি করার জন্য প্রকল্পটি গ্রহণের পরিকল্পনা করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নসহ নারী নেতৃত্বের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত নারীদের নিয়ে  এই প্রকল্পে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিচালক মাকসুদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, পরিকল্পনা কমিশন থেকে কিছু সংশোধনী এসেছে। এগুলো সংশোধন শেষে আগামী মাসে এটি একনেক সভায় উপস্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

দেশে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী-পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সমান সমান। চাকরির ক্ষেত্রে নারী অনেকটা পিছিয়ে। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বেসরকারি কলেজে উচ্চ স্তরে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও খুবই কম।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্যমতে,  দেশের ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ লাখ ৬১ হাজার ৪০১ জন ছাত্র অর্থাৎ শতকরা ৫২ শতাংশ ছাত্র এবং ১৯,৭০,২০৯ জন ছাত্রী অর্থাৎ শতকরা ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী ৩১ শতাংশ আর ছাত্র ৬৯ শতাংশ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ হাজার ৩৯৩ জন শিক্ষকের মধ্যে নারী শিক্ষক ৫ হাজার।  বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি বেসরকারি মাস্টার্স স্তরে ৩৪ শতাংশ, ডিগ্রি (সম্মান) স্তরে ২৭ শতাংশ, ডিগ্রি (পাশ) স্তরে ২৩ শতাংশ, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে  মাত্র ২৩ শতাংশ নারী শিক্ষক কর্মরত।

প্রকল্প প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা বলছেন, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির মূল তিনটি  উদ্দেশ্যই নারী শিক্ষা, নারী নেতৃত্ব, নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব ইউমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ব্যয় করবে ২৫১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়নেই ব্যয় করবে ২৩৫ কোটি টাকা।  একটি একাডেমিক কমপ্লেক্স, নারীদের জন্য ডরমিটরি নির্মাণসহ আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir