রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ; নিম্নবিত্তদের ভরসা মুরগির পা, গিলা-কলিজায়

রিপোর্টারের নাম / ২৫১ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩, ২:৪৬ পূর্বাহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি:

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই মাছ, মাংস কিনতে পারছে না। বাজারে কয়েক দফায় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি সব ধরনের মাংসে দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র মাংসের চাহিদা পূরণ হতো খামারি উৎপাদিত ব্রয়লার মুরগি থেকে। সর্বশেষ সাদা জাতের ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ১৭০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে। তবে বাজার তদারকির পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কিছুটা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২১০ টাকা থেকে ২২০ টাকায়।

এ অবস্থায় দাম সামান্য কমলেও নাগালের বাইরে রয়েছে ব্রয়লার মুরগি। নিম্ন আয়ের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও এখন চাহিদামত মাংস কিনতে পারছে না। তবে পুরোপুরি মুরগির মাংস কিনতে না পারলেও এক শ্রেণির মানুষ গিলা, কলিজা, চামড়া ও মুরগির পা কিনে চাহিদা পূরণ করছে।

বাজারে অন্যান্য মাংসের মধ্যে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা ও অন্যান্য জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার বেশি। এছাড়াও দেশি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে আকৃতি ও আকার অনুসারে প্রতিটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে।
বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজার, চাষি বাজার, মালতিনগর, গোদারপাড়া, কলোনী, বনানীসহ শহরের আশপাশের বেশিরভাগ বাজারের অবস্থা একই।

বনানী এলাকার রিক্সাচালক জাহিদুল ইসলাম পরিবারের ৫ সদস্যের জন্য মুরগির পা কিনছিলেন শহরের রেলবাজার থেকে।

এ সময় তিনি বলেন, ‘রিক্সা চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে ভালো খাবার কেনা সম্ভব হয় না। বাজারে মুরগির কেজি সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা। এ দামে মুরগি কিনতে পারবো না আগেই জানতাম। তাই ভেবেছিলাম গিলা-কলিজা কিনব। কিন্তু সেটাও প্রতিকেজি ১৮০ টাকা হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ৯০ টাকায় আধা কেজি শুধু মুরগির পা কিনেছি।’

মুরগির কলিজা-গিলা কিনতে আসা তোফায়েল হোসেন জানান, বগুড়া শহরের দত্তবাড়ী এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরি করি। মাসে বেতন সাড়ে ৯ হাজার টাকা। রোজা শুরু হয়েছে। গতকাল সেহেরিতে শিমভাজি দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম। খেতে কষ্ট হয়েছিল। আজ ভেবেছিলাম মাংস দিয়ে সেহেরি করব। সামর্থ্য নেই, তাই মুরগির কলিজা-গিলা কিনলাম। ৮৫ টাকা দিয়ে আধা কেজি।’

বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারের মুরগীর গিলা, কলিজা ও চামড়া বিক্রেতা জহুরুল বলেন, বিভিন্ন হোটেল থেকে মুরগীর চামড়া, গিলা, কলিজা ও পাখনা সংগ্রহ করি ভোর বেলায়। মুরগির দাম বেশি হওয়ার কারণে পুরো মুরগি অনেকেই কিনতে পারে না। সেজন্য মুরগীর গিলা, কলিজা ও চামড়া আলাদা করে বিক্রি করি। মুরগির পা প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, রান ৩০০ টাকা, কলিজা ২০০ টাকা, পাখনা ১৩০ টাকা ও মুরগির চামড়া করি ৯০ টাকা কেজি।

বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারের আরেক বিক্রেতা লিটন শেখ বলেন, ‘গিলা-কলিজার ক্রেতা অনেক। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্ররা গিলা-কলিজার প্রধান ক্রেতা। মুরগির বড় ক্রেতা হোটেল-রেস্টুরেন্ট। হোটেলগুলো সাধারণত গিলা-কলিজা নেয় না। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ায়, অনেক হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে গিলা-কলিজার সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামও বেড়ে গেছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir