শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
‘বিচারের আগে শেখ পরিবার রাজনীতি করতে পারবে না’ তারেক রহমানের ৩১ দফা জনকল্যানকর -আমিরুল ইসলাম আলীম ‘সব শক্তি’ নিয়ে ভারতকে হারাতে নামবে বাংলাদেশের যুবারা ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, নতুন রোগী ১৮৬ তবলা বাদক থেকে চ্যানেলের মালিক, বিদেশেও অঢেল সম্পদ গান বাংলার তাপসের ছেলের মারধরে বাড়ি ছাড়া অসহায় বাবা-মা গুরুদাসপুরে বিনা নোটিশে ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ, জায়গা ফিরে পাওয়ার দাবি দেশে আওয়ামী শাসনামলে সবচেয়ে বেশি হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও ভারত তখন চুপ ছিলো আওয়ামী ফ্যাসিজম রুখে দিতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে -দুলু প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

এমপিদের জন্য নির্বাচনী পুরস্কার, এমপিও হচ্ছে ১০০ প্রতিষ্ঠান!

রিপোর্টারের নাম / ২৬৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩, ২:৩৬ অপরাহ্ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের খুশি করতে বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৮৩টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ তালিকা আরও বাড়ানো হবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা থাকবে— বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমপিওভুক্তির এ কার্যক্রমে বিশেষ বিবেচনায় এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এবং জনবল কাঠামোর কোনো শর্ত মানা হচ্ছে না। কেবল রাজনৈতিক বিবেচনায় যাচাই-বাছাই ছাড়া প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, বিশেষ বিবেচনায় প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত হলেও গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিকের ৩২টি, মাধ্যমিকের ১৫টি, উচ্চ মাধ্যমিকের ১২টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের ২০টি এবং ডিগ্রি কলেজের ছয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমপিওভুক্তির পর এই ৮৩টি প্রতিষ্ঠানের পেছনে সরকারের বার্ষিক খরচ হবে ৩২ কোটি ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ৯১০ টাকা।

মন্ত্রণালয়ের এমপিও শাখা সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ বন্ধ থাকার পর ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেয় সরকার। এমপিওজট কমাতে প্রতি বছর নতুন করে এমপিওভুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর দুটি এমপিও দিলেও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের নির্বাচনী এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে যায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিল এমন প্রতিষ্ঠানও ওই তালিকায় থেকে যায়।

এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা না হলে ভোটে প্রভাব পড়বে— এমন যুক্তি দেখিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করা হয়েছে। ইতিবাচক সম্মতি পাওয়ার পর মন্ত্রী ও এমপিরা ডিও লেটার দিয়েছেন। প্রথম তালিকায় এ সংখ্যা ৩৩টি থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩টিতে।

এমপিও শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, গত সোমবার ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকার সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা আমাদের কাছে আসে। প্রতিদিনই এ তালিকা বাড়ছে।

জানতে চাইলে এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত-সচিব (মাধ্যমিক- ২) আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ  বলেন, কতটি প্রতিষ্ঠান এমপিও হবে তার তালিকা মন্ত্রীর দপ্তরে আছে। কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার আমি কেউ নই। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান দাবি করেন, কোনো রাজনৈতিক বিবেচনা নয়, যোগ্যতার মাপকাঠিতে এমপিও দেওয়া হচ্ছে।

এমপিওভুক্তির নীতিমালায় যা আছে

এমপিও নীতিমালা- ২০২১ অনুযায়ী, ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করা হয়। ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা (৩০ নম্বর), পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (৩০ নম্বর) এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার (৪০ নম্বর)। তবে, এ নীতিমালার ২২ ধারায় বিশেষ ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করে এমপিওভুক্তির বিধান রাখা হয়েছে।

২২ ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষায় অনগ্রসর, ভৌগোলিকভাবে অসুবিধাজনক, পাহাড়ি এলাকা, হাওর-বাওর, চরাঞ্চল, ছিটমহল, বস্তি এলাকা, নারী শিক্ষা, সামাজিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠী (প্রতিবন্ধী, হরিজন, সেবক, চা-বাগান শ্রমিক, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি) এবং বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, চারুকলা, বিকেএসপিসহ সংস্থা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলযোগ্য।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে গত বছরের ২১ জুলাই পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া হয়। তখন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে (স্কুল ও কলেজ) চার হাজার ৬২১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে সব সূচকে এক হাজার ৯৪১টি প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা অর্জন করে। অন্যদিকে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে দুই হাজার ৫৪৪টি (মাদ্রাসা ও কারিগরি) প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে মাত্র ২৯৫টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও ৩৫৩টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।

দফায় দফায় যাচাই-বাছাই করে গত বছরের ৬ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই বিভাগের অধীনে দুই হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে। তখন অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একইসঙ্গে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এর ১৬ ধারার চার উপধারা অনুযায়ী আপিল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের জন্য আবেদন চাওয়া হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে এক হাজার ৯১৬টি আবেদন জমা পড়ে। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অধীনে মাদ্রাসা ও কারিগরি পর্যায়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আপিল করে।

আপিল নিষ্পত্তি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত ১২ জানুয়ারি আরও ২৫৫টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পাঁচটি ডিগ্রি কলেজ, ২৭টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ২২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৮১টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পাশাপাশি ৩৩টি মাদ্রাসা, ১৭টি এসএসসি ভোকেশনাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাতটি এইচএসসি বিএমটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এখনও বেতন-ভাতা পাননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir