শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৯ অপরাহ্ন

প্রথম আলোর সম্পাদকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়

রিপোর্টারের নাম / ২৩৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩, ৭:৪৯ অপরাহ্ন

দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সম্পদের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। গত এক দশকে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৯ গুণ বেড়েছে। দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের মধ্যে তিনি এখন শীর্ষ ধনী। শুধু তাই নয়, সম্পদের দিক থেকে তিনি দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক শিল্পপতিকেও ছাড়িয়ে গেছেন। অবস্থান করছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের চূড়ায়।

প্রথম আলো পত্রিকাকে ব্যবহার করে বিতর্কিত ও অবৈধ উপায়ে তিনি ও তাঁর একমাত্র ছেলে মাহমুদুর রহমান শাশা মিলে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন। মত ও পথের হাতে আসা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এবং একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
একটি পত্রিকার সম্পাদক হয়ে গত কয়েক বছরে মতির এতো সম্পদের মালিক হয়ে যাওয়ার তথ্যে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করছেন। সম্পদগুলোর উৎস খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। তাঁর ছেলে শাশার চাঁদাবাজি, বাবার প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে সময়মতো শোধ না করার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনুসন্ধান বলছে, মতিউর রহমানের আয়কর বহির্ভূত সম্পদের ৭০ শতাংশ অর্থাৎ ৯ শত ৫৩ কোটি টাকা নিজের ও স্ত্রী মালেকা বেগমের নামে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন, পাশাপাশি নারীর অধিকার বিষয়ক এনজিওর সঙ্গে যুক্ত।

তাঁদের ছেলে শাশার নামে প্রায় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। প্রথম আলোর নাম ভাঙিয়ে এবং রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার বদৌলতে মতিউর রহমান অপশক্তি ও দুর্নীতিবাজদের কাছ থেকে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন।

জানা যায়, ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে আইন ভঙ্গ করে ঢাকার লালমাটিয়ায় নয়তলা ভবন করেছেন প্রথম আলোর সম্পাদক। বাড়িটির নাম ‘লুৎফু ভবন’।  ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ৩০০ বর্গমিটার ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ২৩ বর্গমিটার জায়গা রাখার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। মানা হয়নি ইমারতের দুইপাশে দুই দশমিক পাঁচ মিটার, পেছনে তিন মিটার এবং ভবনের সামনে এক দশমিক পাঁচ মিটার (পাঁচ ফুট) জায়গা খালি রাখার নীতিমালা। অনুমোদিত নকশা ও বিধিমালার বাইরে তৈরি করা এই অবৈধ ভবনেই থাকেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী।

জানা যায়, রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-১৯৯৬-এর বিধি অনুযায়ী জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্লটে লালমাটিয়ায় ছয়তলার বেশি উচ্চতায় বাড়ি নির্মাণ করা যায় না। কিন্তু লালমাটিয়ার বি ব্লকের ৬/৯ নম্বরের মতির বাড়িটি নয়তলা করা হয়েছে কোনো অনুমোদন ছাড়া। লালমাটিয়ায় বাড়ি করার জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

অন্যদিকে যুবক ও ডেসটিনির আদলে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রকল্প আর্থ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মতির ছেলে শাশা। ২০০৮ সালে ৭৬টি ব্যবসার মাধ্যমে আর্থ ফাউন্ডেশন কয়েকশ’ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। আর এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এর প্রধান খান মোহাম্মদ খালেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাশা এনেক্স কমিউনিকেশনের (এর মালিক মতিউর রহমানের ছেলে) মাধ্যমে আর্থ ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন প্রচারণা উপকরণ তৈরি হয়। শাশাও আর্থ ফাউন্ডেশনের অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত পড়েন।

তথ্য বলছে, একসময় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) করতেন মতি। দলটির মুখপত্র ‘সাপ্তাহিক একতা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সেই সুবাধে। একপর্যায়ে একতা ছেড়ে যোগ দেন দৈনিক ভোরের কাগজে। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণআদালতে ফাঁসির রায় হয় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের। জামায়াত ও দলটির নেতারা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে (পরে আদালতে প্রমাণিত) কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

ঠিক ওই সময় ভোরের কাগজের সম্পাদক মতি সরাসরি সাক্ষাৎকার নেন গোলাম আযমের। যা ছাপা হয় ভোরের কাগজে। দেশের কোনো সম্পাদক নিজে যুদ্ধাপরাধীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার ঘটনা দ্বিতীয়টি নেই। অভিযোগ আছে, জামায়াতের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মতি ওই সময় নিজে গোলাম আযমের সাক্ষাৎকারটি নেন। এরপর থেকে মতির জীবনমান পাল্টে যায়। ভোরের কাগজ ছেড়ে একপর্যায়ে ট্রান্সক্রম গ্রুপের মালিকানাধীন প্রথম আলোর সম্পাদক হন।

এক সময়ের বামনেতা মতি প্রবল আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুবিরোধী। যা তাঁর পত্রিকার নীতিমালায় স্পষ্ট। একাত্তরে বিতর্কিত অবস্থানের জন্য কুখ্যাত প্রয়াত লতিফুর রহমান ট্রান্সকমের মালিক। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটের বাংলা সংস্করণে গতকাল ২৬ জুলাই কথিত একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়- ’দেশে পেট্রলের মজুদ আছে ১৩ দিনের, অকটেন ১১ দিনের’। যা মােটেও তথ্যভিত্তিক নয়। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে ডিজেল, অকটেনের বিষয়ে দেশে আতংক ছড়ানো পত্রিকাটির উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য প্রতিবেদনটি আপলোড করার কয়েক ঘণ্টার পর তা মুছে দেয় ওয়েবসাইট থেকে। তবে যথাযথ তথ্য ছাড়া এমন প্রতিবেদন প্রচার করায় ডেইলি স্টার ‘দু:খ প্রকাশ’ করেনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir