আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেই দলীয় মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। সেখানে দলের দুঃসময়ের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। মুখ দেখে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। জরিপের ভিত্তিতে যাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার গণভবনে আট জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনের নির্বাচনটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের ভোটেই বিজয়ী হতে হবে। এজন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, বৈঠকে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সহিদুল্লাহ খান সোহেল, নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুর রাহমান ভিপি লিটন, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২টায় বৈঠক শুরু হয়ে চলে পৌনে তিনটা পর্যন্ত। শুরুতেই দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা গণভবনে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের স্বাগত জানান।
পরে তিনি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন। বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচন, দেশের বর্তমান অবস্থান, নানামুখী সংকট, সরকারের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পার করে দেশটাকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ এখন আত্মমর্যাদাশীল দেশ। সেই দেশকে স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে তুলে দিতে পারি না। কাজেই সামনে নির্বাচন আসছে, এই নির্বাচনে আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনোভাবেই বিভেদ তৈরি করা যাবে না। গত ১৪ বছরে যে উন্নয়ন করেছি, সেগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।
জনগণকে সঠিকভাবে বোঝাতে পারলে আমরা আবারও ক্ষমতায় আসব ইনশাআল্লাহ।
দলীয় সূত্র জানায়, বৈঠকে জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা স্থানীয় নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। সেগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং নোট নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকের এক পর্যায়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার এক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির পাথরঘাটা ও বেতাগী উপজেলায় সম্মেলন না করতে পারার ব্যাখ্যা দেন। সেখানে দলীয় কোন্দলের কথা উঠে আসে বলে বৈঠকে সূত্র জানায়।
ছাত্রলীগের দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ : বৈঠকে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাও উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এ সময় করোনার কারণে বয়স দুই বছর বাড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেকের বয়স চলে গেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি শেষ করে ফেল। কমিটি গঠনের সময়ে দুই বছর যেন বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়।