শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন

ভোটারদের সাড়ায় সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ

রিপোর্টারের নাম / ১৩৪ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও মোটামুটি বিতর্কহীনভাবে শেষ হওয়ায় সন্তুষ্ট ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারা মনে করছে, এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। ফলে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ নেই—এমন প্রচারের বিরুদ্ধে এখন সরকার জোরগলায় কথা বলতে পারবে। এ ছাড়া এই নির্বাচনকে নিজেদের জয়ের মাইলফলক হিসেবেই দেখছে আওয়ামী লীগ।

বর্তমান সরকারের অধীনে বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যেসব দেশ আমাদের নির্বাচনের দিকে শ্যেনদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তাদেরও বলব, আমাদের যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা আমাদের যে উপনির্বাচনগুলো হলো, সেই নির্বাচনগুলো দেখেন, কিভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এরপর আবার কেন প্রশ্ন ওঠে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি। কক্সবাজার মেয়র নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন…এই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা, কোনো অভিযোগ করতে পারবে না। আজ যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাদের বলব, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ হয়, নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা যে আমরা করতে পারি, সেটা কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি।

কাজেই এটা নিয়ে আর কারো কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভোট চুরি করা লাগে না। আওয়ামী লীগ এমনি ভোট পায়। যখনই মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে।

গতকাল সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। সেখানে বিএনপি জোট ছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীও ভোট বর্জন করেন। ফলে সেখানে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত যে ভোটার উপস্থিত হয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে আরো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো। তবে তারা না এলেও যারা ভোট করেছেন, তাঁরা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো ভোটাররা নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। বিপুলসংখ্যক ভোটার ভোট দিয়েছেন। এতে বিএনপির যে অপপ্রচার ছিল—মানুষ ভোট দিতে আসে না, সেটার বড় জবাব দেওয়া হয়ে গেছে। এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তিনটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ভালোভাবে প্রচার করতে পারলে জনগণ ভোট দেবে। দ্বিতীয়ত, প্রার্থী ভালো হলে ভোট পাওয়া যাবে। তৃতীয়ত, দল ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারবে না।

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। এ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় একটি মাইলফলক। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এ জয়ে দলের নেতাকর্মীরা অনেক উজ্জীবিত হয়েছেন। এ জয়ের উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনেও জয়লাভ করব বলে আশা করছি।’

বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, জনগণ উন্নয়নের স্বার্থে অবাধে নৌকায় ভোট দিয়েছে। নতুন ভোটাররা বিপুল সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। তাঁরা নৌকায় সমর্থন দিয়েছেন। এটি একটি বড় পূর্বাভাস। আগামী জাতীয় নির্বাচনে যে আওয়ামী লীগ বড় ব্যবধানে জয় পাবে এটি তারই পূর্বাভাস।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি এবং অবাধে ভোটদান মুখ্য বিষয়। তবে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করলে নির্বাচনের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পেত। জনগণের উপস্থিতি ও স্বতঃস্ফূর্ত ভোট দান প্রমাণ করেছে, নির্দিষ্ট কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয়। এই নির্বাচনে নৌকার প্রাপ্ত ভোট এবং অপরাপর প্রার্থীর প্রাপ্ত সর্বমোট ভোটের হিসাব আমাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর সঙ্গে আমাদের আরো কিছু স্টাডি পদ্ধতি আছে, যা থেকে আমরা জনপ্রিয়তার মূল বিষয়টি স্টাডি করতে পারব।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir