নির্ধারিত মূল্যে বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন ও মেডিসিনাল প্ল্যান্টস এন্ড হারবাল প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতির বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের সদস্য আ. খ. মাহবুবুর রহমান সাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য ট্যারিফ কমিশনকে বলা হয়েছে। তারা জানিয়েছে দেশের চিনির দামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মূল্যের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সেটা আমরা সমন্বয় করব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিনির ওপর যে শুল্কহার নির্ধারণ করা আছে তা কমানো অথবা ছাড় দেয়ার বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ করব। এটা করা হলে চিনির দাম কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।
টিপু মুনশি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে দাম কমিয়ে দেয়া হয়েছে এবং হ্রাসকৃত মূল্যে তেল বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রাখার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্ত যেসব পণ্য আমদানি করতে হয় সেসব পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজারে বিক্রি করতে হয়।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, দেশে চিনি ও ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। এই দুই পণ্যের দাম ওঠা-নামা করে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ে।
এর আগে সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আয়ুর্বেদিক ওষুধ শিল্প একটি প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা- যা মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।
সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এর উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলো আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। আমরাও আমাদের দেশে উৎপাদিত আয়ুর্বেদিক ওষুধ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারি। এজন্য সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় এ খাতকে কাজে লাগাতে হলে গবেষণার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। এছাড়া এর উপরকারিতা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে। আমরা অতিমাত্রায় এন্টিবায়টিকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। আয়ুর্বেদিক ওষুধ এন্টিবায়টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।