নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদের ছুটির প্রথম দিনেই সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিক সময়ের থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সোমবার রাত থেকে শুরু করে মঙ্গলবার এখন পর্যন্ত এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করতো সেখানে ঈদের এই মৌসুমে প্রায় প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪৫ গাড়ি চলাচল করে। তবে যানজট নিরসনে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।
উত্তরবঙ্গগামী সিরাজগঞ্জের যানজট আতঙ্কে থাকা ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়ক স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকাগামী লেনে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে মুলিবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তায় ধীরগতি রয়েছে। মূলত টোল প্লাজায় টোল আদায়ে বিলম্ব হবার কারণে এই ধীরগতি হয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে ২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর গোল চত্বর এলাকা ও হাটিকুমরুল গোল চত্বর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উদযাপনের জন্য দলে দলে মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে। মূলত ঈদের ছুটি হওয়ার কারণে ২২ জেলার মানুষ এই মহাসড়ক হয়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছে। এই সময় ঢাকা থেকে ফেরা ব্যাংক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট থাকার কারণে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থেকে গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। বগুড়া থেকে ঢাকা গামী বাসের চালক সাচ্ছু মন্ডল বলেন, গত দুইদিন ঢাকা যাবার পথে যানবাহনের চাপ কম ছিল তবে আজকে একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। মূলত গতকাল থেকেই ঢাকা থেকে অনেক পরিবহন এসেছে যারা এখন ফিরছে। এদিকে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে ট্রাক, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করছে।
সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল কবির বলেন, সোমবার রাত থেকে গাড়ির চাপ বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে চাপ কিছুটা কমেছে কারণ হিসেবে তিনি বলেন টাঙ্গাইল মহাসড়কে সময় লাগছে যে কারণে গাড়িগুলো আসতে সময় নিচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এবারের ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে জেলা পুলিশ, জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে রোববার (২৫ জুন) ভোর ৬টা থেকে প্রায় ১ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যা মোতায়েন থাকবে টানা ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন পর্যন্ত। সিরাজগঞ্জের যানজট আতঙ্কে থাকা ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়কের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে জেলা পুলিশ, জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে থানা পুলিশ।
মূলত বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর হয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর দিয়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের ২২ জেলার মানুষ চলাচল করে। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৭-১৮ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে ঈদের সময় এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫-৪৫ হাজারে। এই সময়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতি বছরই যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে গত ঈদুল ফিতরে তেমন কোনো যানজট সৃষ্টি হয়নি এই মহাসড়কে। এই ভোগান্তি এড়াতে এবার ঈদযাত্রায় নলকা আন্ডারপাস ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়েছে।