শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ

ব্যাংকঋণে সুদহারের ৯ শতাংশের সীমা উঠে গেল

রিপোর্টারের নাম / ১২৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

ব্যাংকঋণের সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে নিয়ে নতুন অর্থবছর থেকে কার্যকর হলো ‘স্মার্ট’ (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সুদহার করিডর। গতকাল রবিবার থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এতে রেপো হার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

মূল্যস্ফীতিনিয়ন্ত্রণে অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ মেনে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আর্থিক খাত সংস্কারের শর্তের অংশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন অর্থবছর থেকে কার্যকর হয়েছে ‘স্মার্ট’ সুদহার করিডর।

ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়লে আমানতের সুদহারকে তা আরো ঊর্ধ্বমুখী করবে। বর্তমানে আমানতের বিপরীতে গড় সুদ ৬ শতাংশের ঘরে রয়েছে।
তবে তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা অনেক ব্যাংক ৮ শতাংশ সুদেও আমানত সংগ্রহ করছে।

ঋণের এক অঙ্কের সুদহার ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এত দিন চলে আসছিল। নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতি অনুসরণ করেই ঋণের সুদহারের সীমা উঠে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফর্মুলা অনুযায়ী একেবারে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা উঠে যাচ্ছে না।

সুদের হার নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্মার্ট’ পদ্ধতি চালু করে তা বাজারভিত্তিক করার কথা যেমন বলছে, তেমনি কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কত বেশি সুদ নিতে পারবে তা বেঁধে দিয়েছে।

তবে নতুন সুদহার গ্রাহক পর্যায়ে বাস্তবায়নে মাসখানেক সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নতুন ঋণ দিতে আলোচনা ও দর-কষাকষির মাধ্যমে একটা পর্যায়ে আসতে সময় লাগবে বলে তাঁদের ধারণা।

ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুদহার বাড়াতে গেলে কিছু গ্রাহকের পক্ষ থেকে আপত্তি আসতে পারে। ফলে এটি সমন্বয় করতে ও প্রভাব বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মে মাসের স্মার্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যাংকের বড় ঋণের সর্বোচ্চ সীমা হবে ১০.১৩ শতাংশ, ছোট ঋণে তা ১১.১৩ শতাংশ এবং এনবিএফআইয়ের বেলায় তা ১২ শতাংশের ঘরে থাকতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জুন মাসের ‘স্মার্ট’ সুদহার ঘোষণা করেছে ৭.১০ শতাংশ, যা জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য কার্যকর হবে। তাতে বড় ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১০.১০ শতাংশ। পুরনো ঋণের পাশাপাশি জুলাই মাসে আসা নতুন গ্রাহকের বড় ঋণের ক্ষেত্রে এই সুদহার প্রযোজ্য হবে, যা আগামী ডিসেম্বরের আগে বদলাবে না।

নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসের ১ তারিখে আগের মাসের ‘স্মার্ট’ রেট ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ওই মাসের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ছয় মাসের জন্য কার্যকর থাকবে।

বড় অঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রে এই স্মার্ট সুদহারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। আর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)।

গত ১৮ জুলাই ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে সুদহারের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশের সীমা উঠিয়ে ‘রেফারেন্স রেট’ পদ্ধতিতে সুদহার নির্ধারণের কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর হয়। এদিন থেকে ঋণের সুদহারের সঙ্গে বাড়বে আমানতের সুদহারও।

এদিকে সুদহারের সঙ্গে বিনিময়হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব করার আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্তও গতকাল থেকে কার্যকর হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য জানিয়েছে, বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ প্রকাশ করা হবে না। এখনকার মতো মোট রিজার্ভ প্রকাশ করা হবে। অন্যদিকে বিনিময়হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে আরো একটু সময় নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir