রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতু নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নজরে নেই ওই সকল ঝুঁকিপূর্ণ সেতু গুলোর তথ্য। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ সেতু নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে এলজিইডি। কিন্ত ধোঁয়াশায় সকল প্রকল্প।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার ৩নং সরদহ ইউনিয়ন ও ৫নং চারঘাট ইউনিয়নের মাঝে বড়াল নদীর ওপর দিয়ে গত ১৮ বছর পূর্বে উপজেলার ৩নং সরদহ এবং ৫ নং ইউনিয়নে নির্মীত হয়েছিল একটি সেতু। ২০০৫ সালের দিকে ৩শত ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্থের সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শেষে ২০০৬ সালে সেতুটি সর্বসাধারণের চলাচলে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। দুই ইউনিয়নের মাঝে যানচলাচলের একমাত্র সেতুবন্ধন। বর্তমান সেতুর দুইপাশের রেলিং এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনার মাঝেই পারাপার করছে দুই ইউনিয়নের গ্রামবাসী। তবে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সেতুটির রেলিংয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই ভেঙে গেছে। ফাটল ধরেছে সেতুর দু’পাশের গাইড ওয়ালে। দিনের আলোতে দেখে সেতু পারাপার হলেও রাতে পড়তে হয় বিপাকে। সেতুর দুই পাশে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে, তখন যানবাহনসহ পায়ে হেঁটে চলাচল দুস্কর।
পদ্মা বড়াল নদীর দুইপাশে স্থানীয়রা জানান, একসময় কলা গাছের ভেলা করে ঝুঁকি নিয়ে নদীপার হতো কয়েক গ্রামের মানুষ। নদীর দু’পাড়ের খোর্দগোবিন্দপুর ও মুংলি গ্রামের মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল ওই কলা গাছের ভেলা। দুই ইউনিয়নবাসীর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নদী পারাপার সহজতর করতে ২০০৫ সালের এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজ শেষে ২০০৬ সালে সেতুটি সর্বসাধারণের চলাচলে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। দীর্ঘসময় অতিক্রান্ত হওয়ায় তার স্থায়িত্ব কমে ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে পড়েছে সেতুটি। শিক্ষার্থী ছাড়াও এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ।
স্থানীয় ছাত্র ইমন,সুজন, শাহীন, সোহান বলেন, আমরা প্রতিদিন রেলিং ভাঙ্গা এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করি। সেতু পাড় হতে অনেক ভয় হয়। দীর্ঘদিন ধরেই সেতুর বেহাল অবস্থা। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন সেতুটি ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মান করা হোক। অটোচালক কামাল হোসেন শাহীন মিয়া বলেন, এই সেতুটি এখন মরনফাঁদ। অত্র এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিপননের জন সেতুটি ব্যবহার করে স্থানীয় কৃষকরা। সেতুটি চলাচলে ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় কয়েক কিলোমিটার দুর দিয়ে কৃষকদের কৃষি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য যেতে হচ্ছে। এতে যেমন সময় নষ্ট হয় তেমনি যাতায়াত ব্যয় বেড়ে গেছে বলে জানান মুংলি গ্রামের আব্দুর সাত্তার ।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী চারঘাট রিপোটার্স ইউনিটিকে জানান, খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছি এ সেতুটি এত ঝুঁকিপূর্ণ না কিন্তু মাত্র সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শুরু হয়েছে । তাই নদীর দুইপাড়ের জনগণের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য নতুন সেতু তৈরি করা জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।