নাটোর প্রতিনিধি
আগামী ১০ জুলাই নাটোর জেলা জাতীয় পার্টিরসম্মেলন। সম্মেলনের আগেই চলছে পার্টির উপজেলা ও পৌর সম্মেলন। আর এই জেলা সম্মেলনকে ঘিরে নিজস্ব লোক ও টাকার বিনিময়ে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টির (জাপা-র) আহবায়ক আলাউদ্দীন মৃধার বিরুদ্ধে।
জেলা কমিটির পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ, জাতীয় পার্টিকে সংগঠিত করার পরিবর্তে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে জেলা সম্মেলন করা হচ্ছে। জেলায় জাপার ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের একটি অংশের আস্থাভাজন হয়ে আলাউদ্দীন মৃধা নিজস্ব বলয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়ার পাঁয়তারা করছে ।
নাটোর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর সম্মেলনগুলোও নামকাওয়াস্তে এবং দায়সারাভাবে হলেও এই সব কমিটি নিয়ে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে সংগঠনগুলিতে । নেতাকর্মীদের মধ্যে জেলা কমিটির আহবায়ক আলাউদ্দীন মৃধা ঢাকায় থাকেন । জেলায় আসেন না বলেই চলে । আসলেই তড়িঘড়ি করে ১০ থেকে ১৫ জন নিজস্ব লোক নিয়ে পকেট কমিটি করে আবার ঢাকায় ফিরে যান । সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন তিনি নাটোর সদর উপজেলা কমিটি গঠন করে । যা অনেক নেতাকর্মী জানেনই না ।
২০০২ সালে সর্বশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা জাতীয় পার্টির তিন বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবর রহমান সেন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মন্জুর মোর্শেদ লুলুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয় । তারপর থেকে আর কোন সম্মেলন করা হয়নি । আহবায়ক ও সদস্য সচিব দিয়ে জেলা জাতীয় পার্টির কার্যক্রম চলছে ।
জাপা নেতা মঞ্জুর মোর্শেদ লুলুর অভিযোগ,টাকার বিনিময়ে আলাউদ্দীন মৃধা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের নেতা বানানো হয়েছে। যার একজন লোকও নেই।তিনি লোক দেখানো কমিটির নামে নাটোরে আলাউদ্দীন মৃধা পার্টির সম্মেলন ডেকেছেন । শুনেছি টাকার বিনিময়েও নাকি পদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। জানি না, কী হচ্ছে।
জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক রাসেদুল ইসলাম বলেন, নাটোরে জাপার দুরবস্থা দেখে আমাদের কষ্ট হয়। এখন নাটোরে জাপা বলতে কিছু নেই। আলাউদ্দীন মৃধা আগামীতে পার্টিকে ঘিরে তার অবস্থান শক্তিশালী করতে তিনি ব্যক্তিগত নেতা তৈরীর এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। টাকার বিনিময়ে ও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে নিজস্ব লোকদের দিয়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে । এখন তো আর পার্টির গঠনতন্ত্র মানা হচ্ছে না। যেভাবে কাউন্সিল করা হচ্ছে এমন করে কাউন্সিলর হয় না। অতীতে কখনই এমন প্রশ্ন আসত না।আগে কাউন্সিলে ইলেকশনের মাধ্যমে কমিটি করা হতো।
এখন তো সিলেকশন হচ্ছে। পার্টির বর্তমান নেতৃত্ব নিয়ে এখন জনমনে প্রশ্ন উঠছে। বর্তমান কিছু নেতার নেতৃত্বে জাপাকে স্বাভাবিক পার্টি মনে করছে না জনগণ। যারা নতুন কমিটি করছে এ-সব কমিটি সো কলড কাউন্সিলের মাধ্যমে হচ্ছে। এর মাধ্যমে পার্টি শক্তিশালী হচ্ছে, নাকি শক্তিহীন হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য গত দুইদিন ধরে জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আলাউদ্দীন মৃধার মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায় ।