দেশবাসীকে পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপ্রয়োজনে পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন না, দয়া করে এগুলো ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন। আপনিও এতে উপকৃত হবেন, কারণ এতে বিলও কম হবে।
এলজিআরডিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করুন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) নামে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ একক পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। দেশে এটি এ ধরনের প্রথম প্রকল্প।
একই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) সহায়তায় পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এটির পয়ঃনিষ্কাশন ক্ষমতা ২০ কোটি টন।
শেখ হাসিনা বলেন-তার সরকার ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং উন্নত স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ তাদের নাগালের মধ্যে সব শহুরে সুযোগ-সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন।
দাশেরকান্দি প্ল্যান্টের দৈনিক ৫০ লাখ টন পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের ক্ষমতা রয়েছে, যা রাজধানীর মোট পয়ঃনিষ্কাশনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এই প্ল্যান্ট মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
চীনের অর্থায়নে ৩৪৮২.৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৬২.২ একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ব্যয়ের মধ্যে ১১০৬.৪২ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে, ১০ কোটি টাকা ওয়াসা তহবিল থেকে এবং অবশিষ্ট ২৩৬৬ কোটি টাকা চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসাবে এসেছে।
২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার শতভাগ পয়ঃনিষ্কাশন শোধনের জন্য পাগলা, উত্তরা, রায়েরবাজার এবং মিরপুর এলাকায় আরও চারটি পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাণের লক্ষে সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে।
এই বর্জ্যরে ৯০ শতাংশ পাইপলাইন কভারেজের মাধ্যমে এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশ বাসাবাড়িগুলো থেকে সংগ্রহ করা হবে। খিলগাঁও থানার অন্তর্গত দাশেরকান্দি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি গুলশান (একাংশ), বনানী, তেজগাঁও, নিকেতন, মগবাজার, মালিবাগ, আফতাবনগর, বাড্ডা, কলাবাগান, পান্থপথ, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।