শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

সংলাপ মধ্যস্থতায় নেই আমেরিকা

রিপোর্টারের নাম / ৮০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

অবাধ সুষ্ঠু সংঘাতমুক্ত নির্বাচন নিয়ে মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারির দিনভর বৈঠক, ভীতিহীন সাংবাদিকতা ও মুক্তচিন্তার সুশীলসমাজের ওপর জোর, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলেননি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু গতকাল দিনভর সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক করে কাটিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দিন শুরু করা মার্কিন প্রতিনিধিরা একে একে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র সচিব ও সুশীলসমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রতিটি বৈঠকেই অবাধ, সুষ্ঠু ও সংঘাতমুক্ত শান্তিপূর্ণ আগামী সংসদ নির্বাচনের ওপর জোর দিলেও মার্কিন প্রতিনিধিরা কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ আনেননি। দুপুরে উজরা জেয়া আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সরাসরি জানিয়েছেন, সবাই সংলাপ চান। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের সংলাপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সম্পৃক্ত হবে না। তবে তিনি ভীতিহীন সাংবাদিকতা ও মুক্তচিন্তার সুশীলসমাজের বিষয়ে জোর দিয়েছেন, আলোচনা করেছেন। দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে উজরা জেয়া গণমাধ্যমের সামনে আসেন। তিনি প্রথমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং পরে তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেন। লিখিত বক্তব্যে মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি বলেন, দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখতে চায়। মূলত বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নির্বাচন এবং সুশাসনে ব্যাপকসংখ্যক বাংলাদেশির অংশগ্রহণের ওপর বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। একটি অংশগ্রহণমূলক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতা থাকবে, যেখানে সব নাগরিকের বিকাশ হবে। নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকারের বিষয়ে তাঁর মনোভাব জানতে চাইলে উজরা জেয়া বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্য মন্ত্রীদের কাছ থেকে জোরালো প্রত্যয়ের কথা শুনেছি। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গেও অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, গতকাল দুটি বিশাল জনসভা দেখেছি। স্বস্তির বিষয়টি হচ্ছে, কোনোরকম সহিংসতা ছাড়াই সেটা হয়েছে। আমরা যেমনটা দেখতে চাই, এটা তার সূচনা। ভবিষ্যতেও এর প্রতিফলন থাকবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবে এমন আলোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উজরা জেয়া বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারির স্বীকৃতি দিতে আমি এখানে এসেছি। যুক্তরাষ্ট্র এ সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায়। অবাধ ও মুক্ত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি বলেন, পাঁচ দশক ধরে দুই দেশের চমৎকার সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায় উল্লেখ করে উজরা জেয়া বলেন, আগামী ৫০ বছর এবং তার পরের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন সহায়তা, অর্থনৈতিক, মানবিক সহায়তা এবং নিরাপত্তা খাতে আমাদের যে সহযোগিতা তা সম্পর্কের শক্তিমত্তা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে তুলে ধরে।

উজরা জেয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন। সাংবাদিকরা যাতে অবাধে এবং কোনোরকম ভয়ভীতি ও নিপীড়নের শিকার না হয়ে কাজ করতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণতন্ত্রে নাগরিক সমাজ গুরুত্বপূর্ণ যে ভূমিকা পালন করে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি। তিনি বলেন, মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিষয়ে, বিশেষ করে মতপ্রকাশের এবং সমাবেশের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন উজরা জেয়া।

প্রধানমন্ত্রীর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অঙ্গীকার : উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু গতকাল সকালে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সব সময়ই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য লড়াই করেছি এবং ইতোমধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেছেন, সাক্ষাতে উজরা জেয়া বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারকে সহায়তা করতে তাঁর দেশ নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। কোনো দলের প্রতি তাঁদের কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। তাঁরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রজীবন থেকে এবং এমনকি বঙ্গবন্ধু পরিবার ও আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারের জন্য সব সময়ই লড়াই করেছে। আমরা সব সময়ই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকারের জন্য লড়াই করেছি। বিএনপিই দেশে ভোট কারচুপি শুরু করেছিল, যা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করা হয়েছে। মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উজরা জেয়া উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপারেশনাল খরচের জন্য প্রায় ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। তাঁর দেশ বাংলাদেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা করবে। শ্রম ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় উজরা জেয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম সংস্কার উদ্যোগে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ডোনাল্ড লু ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে আন্ডার-সেক্রেটারি উজরা জেয়া মানবিক সহায়তা থেকে শুরু করে লিঙ্গসমতা কার্যক্রম সমন্বয় করাসহ যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যকার শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারি নিয়ে আলোচনা করেন। একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশীলসমাজ ও সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার ও সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে তাঁরা আলোচনা করেন। এ ছাড়া আন্ডার-সেক্রেটারি এবং প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতা এবং তাদের প্রয়োজন মেটাতে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়েও আলোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জীবিকার সুযোগ সম্প্রসারণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের বৃহত্তর পরিসরে সহায়তা করতে বর্তমান ও সম্ভাব্য দাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থী শিবিরগুলোয় নিরাপত্তাব্যবস্থা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সংকটের অবসান ঘটাতে এবং রোহিঙ্গাদের সবকিছু জানিয়ে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই উপায়ে নিজ মাতৃভূমিতে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারে সামরিক শাসনের ওপর চাপ বজায় রেখেছে।

আইনমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন, ডিজটাল নিরাপত্তা ও শ্রমিকনেতা হত্যা নিয়ে আলোচনা : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি। বৈঠকে কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কথা হয়েছে। এ আইন নিয়ে আমি আগেও যে কথা বলেছি, সে কথাগুলোই আজ তাঁদের বলেছি। আগেও যেরকম বলেছি, এ আইন সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধিত হবে; সে কথাই তাঁদের জানিয়েছি। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনার বিষয়ে আনিসুল হক আরও বলেন, ‘তারা (মার্কিন প্রতিনিধিরা) পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে তাঁরা নিরপেক্ষ। তাঁরা সব দেশেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান। আমরা বলেছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আইনি অবকাঠামো বাংলাদেশে আছে। যেমন সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যে আইনটি করা হয়েছে, তা নিয়ে কথা বলেছি। আমি এও বলেছি, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে এমন আইন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার আইনটি করেছে। উপমহাদেশের অন্য কোনো দেশে এ আইন নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তাঁরাও জিজ্ঞেস করেননি, আমারও বলার প্রয়োজন হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো বিষয় নিয়ে বলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, তাঁরা অবশ্যই কিছু কিছু বিষয় আমাকে বলেছেন। সেসব বিষয় নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। যেহেতু সেসব বিষয় নিয়ে তাঁরা শুধু এতটুকু বলেছেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলে এটা ভালো। আমি তাঁদের পরিষ্কার করে বলেছি, বিচার হবে না- আগের সেই সংস্কৃতি এখন আর বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশে এখন যে কোনো অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও সেই সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার হয়। যেমন ধরেন শহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে কথা হয়েছে। আমি তখন এ কথাই বলেছি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম গত ২৫ জুন পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতমুক্ত নির্বাচন নিয়ে আলোচনা : আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি। বৈঠক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হয়, সেটা তাঁরা দেখতে চান। সেটা নিয়ে আমরা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছি যে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা করবে সরকার। নির্বাচনে যাতে সহিংসতা না হয়, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। এতে কোনো ঘাটতি থাকবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই বড় দলের শান্তিপূর্ণ বড় সমাবেশ হয়েছে, সেটা নিয়ে তাঁরা প্রশংসা করেছেন। নির্দিষ্ট কোনো দলের ব্যাপারে তাঁদের কোনো আগ্রহ নেই, তাঁরা শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে। তাঁরা বলেছেন, রোহিঙ্গারা যাতে শিগগিরই মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সব সময় পাশে আছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি, তাঁরা আগ্রহও দেখাননি। তাঁরা শুধু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়েও আলোচনা করেননি তাঁরা। তাঁরা কোনো নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা নিয়ে বাংলাদেশে আসেননি, এটা পরিষ্কার করে বলেছেন তাঁরা। মার্কিন ভিসানীতি প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, এ ভিসানীতি নির্দিষ্ট কোনো দলের জন্য দেওয়া হয়নি। যারাই সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের জন্যই এ ভিসানীতি প্রযোজ্য হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলার বিশেষ কিছু বাহিনীকে তারা যে প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, সেটাও আমি তাঁদের মনে করিয়ে দিয়েছি।

সালমান এফ রহমানের বাসায় সাক্ষাৎ ও নৈশভোজ : রাতে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের গুলশানের বাসায় সাক্ষাৎ ও নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন উজরা জেয়া এবং ডোনাল্ড লু। নৈশভোজ শেষে সালমান এফ রহমান বলেন, তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়েছেন। বলেছেন কোনো দলের পক্ষে নন তারা। বুধবারের দুই দলের কর্মসূচি পালনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন।

ভবিষ্যতে এটি অনুকরণ করতে বলেছেন। ভিসানীতিও কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে তারা করেননি বলে জানিয়েছেন মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি।

এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, উজরা জেয়া এবং ডোনাল্ড লুর এটি একটি রুটিন সফর। শুধু নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা আসেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir