নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ও ছোনগাছা, বাগবাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের কারিশমায় থানায় অন্তর্ভূক্ত হল না হত্যা মামলা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের ময়না তদন্ত না হওয়ায় এলাকা চলছে নানা রকম জল্পনা কল্পনা। এদিকে দিনদুপুরে মানুষ হত্যা করার পরেও দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছে হত্যাকারীরা। পুলিশ বলছে, হত্যা হওয়ার পর কারও কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্তের জন্য লাশ আনতে পারিনি। অপর দিকে চেয়ারম্যানরা বলছে, নিহতের স্ত্রী ও এতিম শিশুকে হত্যার উপযুক্ত বিচার দিব। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের ডিগ্রীপাড়া গ্রামে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত মঙ্গলবার, ১১জুলাই ২০২৩ইং তারিখে ডিগ্রীপাড়া গ্রামে ফরজ আলীর পু্ত্র নুরুল ইসলাম (৬৫)এর সাথে তার আপন পুত্র আব্দুল মোমিন (৩৫) সাথে মাটি কাটা নিয়ে কথাকাটি হয়। কথাকাটির একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম সহ তার আরোও দুই সন্তান আব্দুল মালেক (৪০) ও আব্দুল মান্নান (৪৩) লাঠিসোটা নিয়ে আব্দুল মোমিননকে বেধরক মারপিট করে। বেধরক মারপিটে আব্দুল মোনিন অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সহোদর ভাইরা উদ্ধার করে লুকিয়ে রাখে।অবস্থার অবনতি হলে ১৪ জুলাই আব্দুল মোমিনকে শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিকেল হাসপাতাল এন্ড কলেজে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল মোমিন শুক্রবার, ১৪জুলাই ২০২৩ইং তারিখে দুপুর ২টার দিকে মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুবরনের পর হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে তড়িঘরি করে লাশ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায় তার সহোদর ভাইয়েরা। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর নিহত স্ত্রীকে জমি লেখে দেওয়ার লোভে হত্যাকারীদের বাঁচাতে দাফনের পূর্বে পিপুলবাড়িয়া বাজারে চলে বাগবাটি ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও ছোনগাছা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র দেনদরবার। খবর পেয়ে নিহতের বাড়িতে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিতে আসলে জমি লেখে দেওয়ার লোভে স্ত্রী কোন অভিযোগ করেন না। স্ত্রীর কোন অভিযোগ না পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ নিয়ে আসে না পুলিশ। এরই মধ্য তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন কার্য্য সম্পন্ন করে হত্যাকারিরা।
১৬জুলাই ২০২৩ইং তারিখে নিহতের বাসায় হত্যা মামলা মিমাংসা করার লক্ষে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলন, ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম সহ এলাকার মুরুব্বিরা সামাজিক শালিসে তা মিমাংসা করতে পারে না। সামাজিক শালিসে মিমাংসা না হওয়ায় নিহতের স্ত্রী বলেন, আমার শ্বশুর নুরুল ইসলাম, ভাসুর মালেক ও মান্নান আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি হত্যার বিচার চাই।
ছোনগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, নিহত আব্দুল মোমিন এর হত্যার উপযুক্ত বিচার দিব। আজ ১৬ জুলাই সামাজিক শালিসে বসেছিলাম। বিচার শেষ করতে পারিনি। পুলিশের সাথে কথা বলে স্ত্রী ফাতেমা ও শিশু সন্তান মরিয়মকে উপযুক্ত বিচার দিব।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, মাটি কাটা নিয়ে বাপ-পুত্রের মারামারিতে নিহতের ঘটনায় বৃষ্টির ভিতর ভিজে রাত্রীতে মোমিনের লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য আনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্ত্রী সহ কারোও কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ আনেনি। স্ত্রী লিখিত দিয়েছি, তার কোন অভিযোগ নেই। তবে এখন যদি স্ত্রী অভিযোগ বা মামলা করে তবে তিনি আদালতে মামলা করুক। মামলার আদেশ অনুযায়ী কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করব।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরাজগঞ্জ সার্কেল) রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার কর্তৃক হার্ট এ্যাটাকে সার্টিফিকেট দিয়েছি। তাই সদর থানা পুলিশ ময়না তদন্ত করার জন্য লাশ মর্গে পাঠাইনি।