আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে বলে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিদেশিদের চাপের কাছে মাথা নত করব না। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে।
গতকাল বুধবার গণভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈশ্বিক মন্দার চাপ থাকলেও দেশের অর্থনীতি গতিশীল আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা এখন এমন একটা জায়গায় আছি, যেখানে অর্থনৈতিক চাপটা আছে। গোটা বিশ্বই এখন ডলার সংকটে। আমাদেরও আছে। তারপরও আমি বলব, আমাদের অর্থনীতি গতিশীল আছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা সমাজের সবদিকে লক্ষ্য রেখে দেশটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি—২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ২০০৮-এ আমরা ঘোষণা দিয়েছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন আমরা ঘোষণা দিয়েছি স্মার্ট বাংলাদেশ করব।
দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুত আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের চালের অভাব নেই। চাল এবং অন্যান্য ফসল প্রচুর পরিমাণে আছে। আজ (বুধবার) খাদ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আমাদের তো চাল রাখার জায়গা নেই। এখন জায়গা
খালি করি কীভাবে।
নতুন করে মজুতের জায়গা খালি করতে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনীকে রেশন দিই। তাদের মধ্যে যাদের রাখার
ব্যবস্থা আছে, তাদের আমরা একবারে তিন মাসেরটা দিয়ে দেব। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভিজিডি, ভিজিএফ প্রতি মাসে দিই। দরকার হলে সেটাও তিন মাসের দিয়ে আমরা জায়গা খালি করে সেখানে আবার খাদ্য মজুত করব। এতে ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগে সমস্যা হবে না।
গ্রামে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, হয়তো ঢাকা শহর সবাই দেখেন, গ্রামের দিকে যাননি। গ্রামে কোনো পণ্যের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি নেই। আজ বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা এসেছিলেন। জিজ্ঞেস করলাম কী অবস্থা। তারা বলেন, এখানে দাম বেশি। আমাদের ওখানে সব ঠিক আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সেটাও কার্যকর করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবে। সে প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ মানুষ অন্তত খেয়ে-পরে ভালো আছে। এখন বর্ষাকালেও শীতকালের সবজি দেখা যায়। সবই পাওয়া যায়। আবার সেটার দাম বেশি হলে সবাই চিৎকার-চেঁচামেচি করে। আগে তো এগুলো পাওয়াই যেত না। এখন সবই পাওয়া যাচ্ছে।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, এ নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। পদ্মা সেতু, এই একটা সিদ্ধান্ত। এখন সবাই বাংলাদেশকে সমীহ করে। পদ্মা সেতুতে দক্ষিণের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেছে।
দেশের জনগণের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে উন্নত জীবন দেওয়ার পাশাপাশি ভূমিহীন গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘর প্রদান, একই দিনে সারা দেশে শত সেতু ও শত সড়ক উদ্বোধন, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানসহ দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। সভায় ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সূচনা বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ দলের নেতাদের বক্তব্য শোনেন।