উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আমিরুল ইসলাম (৫২) নামে এক কৃষককে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী টুটুল প্রামানিককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা র্যাব-১ এর সদস্যরা।
গ্রেপ্তারকৃত টুটুল প্রামানিক উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গোনাইগাঁতী গ্রামের নুরুল প্রামানিকের ছেলে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ডিউটি অফিসার আবুল কালাম এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার টুটুল প্রামানিককে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা। আজ শুক্রবার সকালে তাকে উল্লাপাড়া মডেল থানায় হস্তান্ত করা হলে দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগ পত্রে উলেখ্য করা হয়েছে, নিহত কৃষক আমিরুল ইসলামের সাথে আসামীদের পূর্বে থেকে বিরোধ ও শক্রুতা চলে আসছিলো। মামলার ১ নং আসামী উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৬ নং ওয়ার্ডের সভাপতি
আব্দুল হাই বিভিন্ন বিচার শালিস করে গ্রামের আসহায় মানুষের নিকট থেকে টাকা গ্রহন করে। এসব কথা লোকজন বলতে গেলে তাদের হুমকী ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ঘটনার কিছু দিন আগে গ্রামের লোকজনের মধ্যে নলকুপের স্ক্রীম স্থাপন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে শালিসী বৈঠক হয়। বৈঠকে স্ক্রীম মালিকদের কিছু টাকা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই এর কাছে জমা রাখা হয়। কিন্তু এটাকা তিনি স্ক্রীম মালিকদের আর ফেরত দেননি। বিষয়টি নিয়ে কৃষক আমিরুল ইসলাম সহ এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানায়। এতে খুব্ধ হয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই। তিনি আমিরুল ইসলামকে খুন করার পরিকল্পনা করে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারী রাতে কৃষক আমিরুল ইসলাম গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এসময় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই সহ আসামীরা তার উপর হামলা চালায়। তাকে লোহার রড, হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ ফেব্রæয়ারী সকালে তার মৃত্যু হয়।
এঘটনায় নিহত কৃষকের ছেলে নাঈম প্রামানিক বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উলেখ্য করে উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে টুটুল প্রামানিক পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা।