রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু বাড়ার পরিস্থিতিতে এডিস মশা নির্মূলে ‘বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস (বিটিআই)’ নিয়ে আসছে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বিটিআই অনেক দেশে কার্যকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিটিআই এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। মশার লার্ভা ধ্বংস করে এটি। এর বৈশিষ্ট্য হলো এতে মানুষের ক্ষেত্রে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এটি পানিতে প্রয়োগ করলে অন্য জলজ প্রাণীরও ক্ষতি হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) বলছে, বিটিআই লার্ভা ধ্বংস করে। তবে এটি প্রাপ্তবয়স্ক মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই ব্যাকটেরিয়া প্রাকৃতিকভাবে মাটিতেই জন্মায়। বিশ্বে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এর ব্যবহার হচ্ছে।
ডিএনসিসি সূত্র বলছে, মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ওষুধটি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এটি এখন ডিএনসিসির মশা নিধন কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচলিত মশক নিধন পদ্ধতিতে আশা অনুযায়ী ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা বিভিন্ন দেশে মশা নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে বিটিআই আনার সিদ্ধান্ত নিই। বিটিআই বন্দরে এসেছে গত সপ্তাহে। এখন যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে আমরা দ্রুত এটিকে মশক নিধন কার্যক্রমে যুক্ত করতে চাই।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা নির্মূলে বিটিআই কার্যকর হয়। এটি অনেক দেশে প্রমাণিত। এখন ঢাকা উত্তর সিটির এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের জন্য ভালো সংবাদ।
সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, বড়ি, তরল, গুলি, পাউডার ইত্যাদি নানা রকমে বিটিআই পাওয়া যায়। জমে থাকা পানি, বিভিন্ন পাত্রে থাকা পানিসহ পুকুর, নর্দমা, ড্রেন, ডোবা বা যেকোনো স্থানে প্রয়োগ করা যায়। এই লার্ভানাশক যানবাহন, উড়োজাহাজ, হাতে চালিত স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়। মানুষ, পোষা প্রাণী বা অন্য প্রাণী, জলজ প্রাণী ও মৌমাছির জন্যও ক্ষতিকর নয়।