করোনা মহামারির কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফর্মাল সেক্টর (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩০ জেলায় একযোগে চালু করা হয়েছে ওয়েলফেয়ার সেন্টার। রোববার (৩০ জুলাই) ওয়েলফেয়ার সেন্টারগুলোর উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টারের ভেতরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও গাজীপুর জেলার অন্তর্গত জেলা ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এ উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর জেলার জন্য একটি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও নারায়ণগঞ্জ জেলার জন্য একটি ওয়েলফেয়ার সেন্টার হবে। এছাড়া টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, নওগাঁ, বগুড়া, পাবনা, বরিশাল, কুষ্টিয়া, যশোর, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, পটুয়াখালী, খুলনা, রাঙামাটি এবং কুমিল্লায় ওয়েলফেয়ার সেন্টার খোলা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। এতে সভাপতিত্ব করেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান।
ইমরান আহমদ বলেন, যারা ফেরত আসেন তাদের কথা কেউ জিজ্ঞেস করে না। যার কারণে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে এটি সেই প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল এতদিন প্রবাসীরা দিয়েছে, এখন আমরা দেব। এ প্রতিশ্রুতির ফলস্বরূপ এই রিইন্ট্রিগেশন প্রকল্প।
মন্ত্রী বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে আমরা একটি হাসপাতাল করব। তথ্য থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো পরিকল্পনা করার মূলে আছে তথ্য। তথ্য সংগ্রহ করা হলো কিন্তু হ্যাকড হয়ে গেল এ রকম হলে চলবে না। তথ্যের নিরাপত্তা দেখতে হবে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে কোভিডের কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের রিইন্টিগ্রেশন প্রজেক্টের সাবসিডি চুক্তি সই হয়। ৪২৭ কোটি টাকার এ প্রকল্প থেকে স্থাপন করা ওয়েলফেয়ার সেন্টারে কোভিডকালে ফেরত কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে যাচাই-বাছাই করে ২ লাখ কর্মীকে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বয়স্ক, নারী ও খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন যাদের, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া এই প্রকল্প থেকে ২৫ হাজার ৫০০ বিদেশ ফেরত কর্মীকে দেওয়া হবে রিকগনিশন অব প্রাইম লার্নিং সার্টিফিকেট অর্থাৎ দক্ষতার সনদ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে বিদেশফেরত কর্মীদের নগদ প্রণোদনা, আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা, ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতা, কাউন্সেলিং, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা, দক্ষতা সনদ প্রদান, কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা এবং কল্যাণমূলক অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হবে।
এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিদেশফেরত কর্মীদের একটি তথ্যসমৃদ্ধ ডাটাবেইজ তৈরি হবে, যা বাংলাদেশে ফেরত কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রথম। ২০২০ সাল থেকে করোনার কারণে ফেরত কর্মীদের প্রকল্প সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। তবে ২০১৫ সাল হতে ফেরত কর্মীরাও প্রকল্প সুবিধার অন্তর্ভুক্ত।