‘‘ভিত্তিক খেলার আনুষাঙ্গিক প্রয়োজন’ প্রকল্পে প্রতিটি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বরাদ্দের খবর জানেন না ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
এলজিইডি’র টেন্ডারে মাধ্যমে ৬টি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে মর্মে বুঝিয়ে সুকৌশলে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে মর্মে বুঝিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫ হাজার টাকার খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয় স্থাপন করে দিয়ে ৬টি বিদ্যালয়ের বিল উত্তোলন করার পায়তারা করছে।
প্রধান শিক্ষক এর কারিশমায় ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩৪ হাজার ২’শ ৫০ টাকার সরঞ্জাম পাচ্ছে না। এতে স্ব স্ব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বিপাকে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
তথ্যানুসন্ধানে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘববফ নধংবফ ঢ়ষধুরহম ধপপবংংড়ৎরবং এর ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্ধ টাকা থেকে ৭.৫% ভ্যাট ও আয়কর ৩% কর্তনের পর ১ লাখ ৩৪ হাজার ২’শ ৫০ টাকা স্ব স্ব বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা করে সরঞ্জাম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ বিল/ভাউচার দাখিল করে অর্থ উত্তোলন করবে। কিন্তু কয়েলগাঁতী-শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাকিব হাসান ১১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কয়েলগাঁতী-শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নতুন ভাঙ্গাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় হামকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাসনা মুজিব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের যোগসাজশে খেলাধুলার সরঞ্জামের স্থাপনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাকিব হাসান সরঞ্জামের ঠিকাদার রবিউল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করেন।
তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নীট বরাদ্দ ১ লাখ ৩৪ হাজার ২’শ ৫০ টাকা পাওয়ার পর ঈশ্বরদীর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের রবিউল এর সাথে যোগাযোগ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৪ হাজার টাকার সরঞ্জাম করে দেন। এই প্রকল্প থেকে ৬টি বিদ্যালয় থেকে সুকৌশলে প্রায় ৬ লাখ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জানান, আমাকে বলা হয়েছে, খেলাধুলা সরঞ্জাম স্থাপন করছে ঠিকাদার। ঠিকাদার কি স্থাপন করে দিবে তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেখে নিবে। এখানে আমাদের দেখার কিছুই নেই। ফুলবাড়ি বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার খেলাধুলার সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বলেন, খেলাধুলা সরঞ্জাম স্থাপনে রাকিব হাসান এর দায়িত্ব নিয়েছে। খেলাধুলা সরঞ্জাম খুবই নিম্নমানের। পুরাতন পাইপে নতুন রং দিয়ে খেলাধুলার সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। আমি অসুস্থ্য। এগুলো বিষয়ে আপনি কয়েলগাঁতী-শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাকিব হাসানের সাথে কথা বলেন।
কয়েলগাঁতী-শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা ৬টি প্রতিষ্ঠান একত্রে হয়ে ঈশ্বরদীর রবিউল কাছে খেলাধুলার সরঞ্জামের ক্রয় ও স্থাপনের জন্য অর্ডার দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৬টি বিদ্যালয়ে খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এখানে কোন দূর্নীতি হয়নি।
টিপিএন২৪/ আরএইচএইচ