শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন

নতুন দিগন্তে পৌঁছবে দেশ

রিপোর্টারের নাম / ১৩৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই ঘুচে যাচ্ছে ঢাকা নগরবাসীর যাতায়াতের ভোগান্তি। কেউ মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে ২০ মিনিটে যাবেন মতিঝিল। কেউ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দশ মিনিটে আসবেন ফার্মগেট থেকে এয়ারপোর্ট। আবার গাজীপুর থেকে বিআরটি-দিয়ে আধা ঘণ্টায় এয়ারপোর্টে যাতায়াত। স্বস্তি পাবেন আকাশপথের যাত্রীরাও। বিমানবন্দরে গিয়ে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। নির্দিষ্ট সময়েই ফ্লাইট ছেড়ে যাবে থার্ড টার্মিনাল থেকে। যাত্রীরা দেখবেন বিশ্বমানের এক অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন। এ তো গেল রাজধানীর চিত্র।

দ্রুততম সময়ে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর যাওয়ার সুযোগ থাকছে পদ্মা রেল সেতুর বদৌলতে। সহজে যাওয়া যাবে খুলনা  থেকে  মোংলায়। এর বাইরে চট্টগ্রামে খুলে দেওয়া হচ্ছে এশিয়ার অন্যতম কর্ণফুলী টানেল। খুলছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে মাত্র ছয় ঘণ্টায় রেলগাড়িতে সৈকতনগরী কক্সবাজারে যাওয়ার অনন্য সুযোগ। যোগাযোগে এমন  বৈপ্লবিক অগ্রগতি সাধনে গোটা জাতি অধীর আগ্রহে  অপেক্ষমাণ।
এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপে অর্থনীতিবিদরাও গর্বের সঙ্গে এখন বলতে বাধ্য হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উন্নয়নের রূপকার হিসেবে অ্যাখ্যা দিতে।  তারাও এখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেন্ট ফ্লাইভব্জার্গের ভাষায় বলছেন,
বৈশ্বিক জিডিপির ৭ শতাংশ আসে বিশ্বের সকল মেগা প্রজেক্ট থেকে। এই সত্য এবং বাস্তবতা গভীরভাবে অনুধাবন করেছেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভালো করেই জানেন, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়তে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বর্তমান সরকার ১০টি মেগাপ্রকল্প নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু এবং মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়েছে।

বাকি সাতটি চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। এই সাতটি চালু হলেই বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র বদলে যাবে। মাথাপিছু আয় ও প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে যাবে। সরকারের হাতে বর্তমানে ১০টি মেগাপ্রকল্প ছাড়াও ছোট-বড় ৫৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তবে  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার কমপক্ষে এই সাতটি মেগাপ্রকল্প চালুর জন্য নিরবচ্ছিন্ন কাজ করছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত বছর স্রেফ পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় জিডিপিতে ১.২ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। অর্থাৎ মেগাপ্রকল্প বিনির্মাণ ও বাস্তবায়নের ফলে দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশের চেহারা। বদলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের যাপিত জীবনযাত্রার মান। যোগাযোগ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে উন্নতির বিস্ময়কর অগ্রগতি পৃথিবীতে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এসব প্রকল্পগুলো আজ এদেশের উন্নয়নের ইতিহাসে রূপকথায় পরিণত। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, থার্ড টার্মিনাল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে,  রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্পগুলো আজ একেকটি রূপকথা। যার রূপকার একজনই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেষ হচ্ছে মেট্রোরেলের প্রতীক্ষা  ॥ আগেই চালু হয়েছিল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল। যোগাযোগ খাতের ইতিহাসের প্রথম মেট্রোরেল আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চলাচলও শুরু হয়। এখন প্রহর গুণা হচেছ সেপ্টেম্বর থেকেই যাত্রীদের জন্য চালু করার।
বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের সব কাজ শেষে যখন উত্তরা থেকে মতিঝিল যাবার সুযোগ পাবেন নগরবাসী তখন কি ধরনের প্রভাব পড়বে যোগাযোগ খাতে এখন সে সমীক্ষাও শেষ। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু এই প্রকল্পটিই মেগাসিটি ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে। মাত্র ত্রিশ মিনিটেই উত্তরা থেকে মতিঝিল যাওয়া যাবে ননস্টপে। আর বিরতিতে লাগবে ৪০ মিনিট। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের পথের দৈর্ঘ্য ১১.৭৩ কিলোমিটার। এ পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ী), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও।

এসব স্টেশন থেকে এখন যাত্রীরা সকাল থেকে রাতে মেট্রোরেলে চড়তে পারছেন। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে ৭টি- বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল।  মেট্রোরেল জানা গেছে- । ২০১৬ সালের জুন মাসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকায় চালু হয় এমআরটি লাইন-৬ এর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ। ২৯ ডিসেম্বর জনসাধারণের চলাচলের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়। পরে আগারগাঁও-উত্তরা অংশ চালু হয়। সর্বশেষ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চালু করা হয়।  এত বিশাল প্রকল্পের সর্বশেষ সমীক্ষায় ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। যদিও শুরুতে এ ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা।

মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। আলোচিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। পরীক্ষামূলক চলাচলের ৩টি ধাপের প্রথমটি শুরু হয়েছে গত ৮ জুন থেকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে। এর পর যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পথে মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ॥ মেট্্েরারেল যেমন প্রথম স্থান দখল করেছে- এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও তেমনই প্রথম হয়েছে যোগাযোগের নতুন ধরণে। এর আগে কখনো এ ধরনের এলিভেটেড এক্সপ্রেস তৈরি হয়ননি এ দেশে। সেজন্য ঢাকার প্রায় দুই কোটি মানুষ অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে কবে নাগাদ এতে চড়বেন। এটি এমন এক প্রকল্প যাতে নেই কোন সিগন্যাল, নেই ট্রাফিক জ্যাম। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাগোয়া পূর্বপাশের কাওলা পয়েন্ট  থেকে তেজগাঁও হয়ে এক টানে ফার্মগেট যাওয়া যাবে মাত্র ১২ মিনিটে। ওখান থেকে আর মাত্র ১৫  মিনিটে যাওয়া যাবে কুতুবখালী।
যানজট নিরসনে নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে এ সুবিধা পেতে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে না  নগরবাসীকে। আসছে সেপ্টেম্বরেই এ অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে ঘষামাজা  ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ।  এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রথম অংশের বনানী পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ ও বনানী থেকে মগবাজার অংশে ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অন্যদিকে মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত শেষ অংশে ভৌত কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের সর্বমোট কাজ শেষ হয়েছে ৬৯  শতাংশ। পুরো প্রকল্প শেষ হলে রাজধানীকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীর সঙ্গে যুক্ত করবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
স্বপ্নের থার্ড টার্মিনাল ॥ এয়ারপোর্ট সেবা নিয়ে আমাদের বদনামের শেষ নেই। এই নাই সেই নাই এর অজুহাতে চলছে বিমানবন্দরের কার্যক্রম। শত চেষ্টা আর পদক্ষেপ নিয়েও বিমানবন্দরের সেবা বিশ্বমানের নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। এ নিয়ে দেশে বিদেশে সরকার প্রধানকেও নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার চির অবসান ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক মানের  যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতেই থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অফিসিয়াল নাম হচ্ছে- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্প। এখন এটিই দেশের  প্রধান এবং সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

গত পাঁচ দশকে এভিয়েশন খাতে যাত্রীদের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে থার্ড টার্মনাল জরুরি হয়ে পড়ে। যাত্রীবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকারই ২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেয়। যার উদ্বোধন হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এই টার্মিনাল নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগী সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ্এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন- আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই উদ্বোধনের জোর প্রস্তুতি চলছে। যদিও পুরোপুরি চালু হবে ২০২৪ সালে। ইতোমধ্যে ৭৫ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। এ টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত লন্ডনের হিথ্রো, নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি, সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি, আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দরের আদলে। এ টার্মিনাল পুরোদমে চালু হলে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সংকেত বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে যাবে।
প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নকশাকার স্থপতি রোহানি বাহারিন এই অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবনটির নকশা করেছেন। তৃতীয় টার্মিনালে মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকছে। বহির্গমনের জন্য মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে । এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ কাউন্টারসহ বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৬টি। থাকবে আগমনীর জন্য ৫টি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি কাউন্টার। টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য থাকবে ৪টি পৃথক বেল্ট। ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল কার পার্কিং তৈরি করা হচ্ছে। এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে।
জানা গেছে- থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজও পেতে যাচ্ছে জাপান। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে টার্মিনালটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জাপানকে দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) টার্মিনালটির গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পরিচালিত হবে। বিমানবন্দর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের একটি অংশ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং। বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণের পর পথ দেখিয়ে পার্কিং বুথে নেওয়া, দরজায় সিঁড়ি লাগানো, যাত্রীদের মালপত্র ওঠানো-নামানো, উড়োজাহাজের ভেতর পরিষ্কার করা, চেক-ইন কাউন্টারে সেবার মতো কাজ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অন্তর্ভুক্ত।
পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প ॥ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর চেয়ে কোনো অংশেই কম নয় পদ্মা রেল লিংক। পদ্মা সেতু বহুমুখী প্রকল্পটি পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে জাতীয় ও আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এ রেলপথটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২৩টি জেলায় প্রথম রেলসংযোগ স্থাপন করবে। বহুল প্রতিক্ষীত এই সেতু মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত করেছে। সেতুর সড়কপথের কাজ শেষ হয়েছে বছর খানেক আগেই। গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন নিজেদের অর্থে গড়া স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সড়ক পথের সঙ্গে পদ্মা সেতুতে রেলপথ সংযোগ অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয় পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের। এ প্রকল্পে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা চীন সরকার অর্থায়ন করছে জিটুজি পদ্ধতিতে। ২০২৩ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে অনেকাংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়েছে। সেপ্টেম্বরে এ প্রকল্পের কয়েকটি অংশ খুলে দেওয়া হবে। ৩৯.৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ অংশে এখন হরদম চলছে কাজ। বর্তমানে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল লিংক প্রকল্পে রেল স্টেশন, ভায়াডাক্ট, রেলসেতু ও রেললাইনের কাজ চলছে পুরোদমে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে রাজধানীর রেল সুবিধা দ্রুত সংযুক্ত করতে ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

চীনা ঠিকাদার সিআরইসি রেললাইন, রেল স্টেশন ও রেল সেতু নির্মাণ করছে সেনাবাহিনীর সিএসি’র তত্ত্বাবধানে। এ অংশের পলাশপুর এলাকায় শুরু হয়েছে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ। ক্রেনে ভায়াডাক্টের ওপর লোহার রেললাইন তোলা হচ্ছে। লোহার গেজ বাফল, ইলাস্টিক ক্লিপ, ফাইবারের ইন্সুলেটার ও ফাসনার কানেক্টর দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে সিøপারের সঙ্গে। ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালে। আর পদ্মা সেতু দিয়ে এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা-ভাঙ্গা যাত্রীবাহী রেললাইন চালুর জোর প্রস্তুতি চলছে।
গাজীপুর এয়ারপোর্টে বিআরটি ॥ আলোচিত সাতটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কের কেনদ্রবিন্দুতে রয়েছে ঢাকা গাজীপুরের ্্এই প্রকল্প। যা বিআরটি নামে পরিচিত।যদিও গত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর ফিতা কেটে উত্তরার আজমপুর-টঙ্গীর মধ্যে উড়াল সড়কের একাংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও একটি নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী লাাগায় মানুষের ভোগান্তি যেমন চরমে সরকারও বিব্রত। এটি উড়াল পথ নামে পরিচিত। বার বার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তিন বছরের কাজ ৮ বছরেও শেষ হয়নি। সর্বশেষ ঈদুল আজহজার সময় পর্যন্ত হাউস বিল্ডিং থেকে চেরাগ আলী কলেজ গেট পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হয়েছে চলাচলের জন্য। একটু একটু করেই কাজ এগুতে এগুতে এখন প্রায় শেষের পথে। প্রকল্প পরিচালক বলছেন আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হবে সব কাজ সব অপ্ক্ষোর।
জানা গেছে- চীনের জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ও গেজুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড পৃথকভাবে বাস্তবায়ন করছে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্প। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট – গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বিআরটি প্রকল্প। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯২ শতাংশ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্প।

২০ কিলোমিটারের এই প্রকল্পে আছে- এয়ারপোর্ট উড়াল সেতু, জসীম উদ্দীন উড়াল সেতু, হাউজ বিল্ডিং থেকে স্টেশন পর্যন্ত নির্মিত উড়াল সেতু, টঙ্গীতে উড়াল সেতু অংশে নির্মাণাধীন স্টেশন, সমতলে নির্মাণাধীন স্টেশন (তারাগাছ স্টেশন), বিআরটি করিডোরের নির্বাচিত সড়কের অংশ, গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা স্টেশন ও উড়াল সেতু, বিআরটি ডিপো (নলজানি, গাজীপুর বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে গাজীপুর, টঙ্গী ও উত্তরা এলাকার মধ্যে দ্রুত, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। বিআরটির দুদিক থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে সক্ষম হবে। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেডসহ ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার বিআরটি লেন, ১০ লেন বিশিষ্ট টঙ্গী সেতু পুন:নির্মাণ, ৭টি ফ্লাইওভার, একটি বাস টার্মিনাল, ১১৩টি সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, ২৪ কিলোমিটার উচ্চক্ষমতার ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে।
চার হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) অর্থায়ন করছে। সম্পূর্ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০.৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে সওজের কাজ ১৬ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৭টি ফ্লাইওভার রয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতায় ৪.৫ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে। ১০-লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ১৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ, বিআরটি লেন, ৭টি ফ্লাইওভার, ১৯টি বিআরটি স্টেশন, ২০ কিলোমিটার চেইন এবং দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করবে।
কর্ণফুলী টানেল ॥ দেশে তো বটেই গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নির্মিত হচেছ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। কর্ণফুলী নদীর মধ্যভাগে পানির ১৫০ ফুট নিচে অবস্থিত এই সড়ক সুড়ঙ্গ। এই টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার। তবে এর সঙ্গে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি সংযোগ সড়ক যুক্ত রয়েছে। এই সুড়ঙ্গ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে এটাই প্রথম টানেল। এটি একটা বিস্ময়। টানেলের কারণে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। টানেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-আনোয়ারা ওয়ান সিটি টু টাউন গড়ে উঠবে।
এটি বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এর আগে ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রসস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বাড়ানোর কারণে নির্মাণ ব্যয় ধরা হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদি ঋণ হিসেবে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিয়েছে। আর বাকি টাকা বাংলাদেশের নিজস্ব।
এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনষ্ট্রাকশন কোম্পানি। চট্টগ্রাম শহরের নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে শুরু হওয়া এই টানেল নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা প্রান্তের চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড কারখানার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পৌঁছাবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।
পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারামুখী ২ হাজার ৪৪৬ মিটার দীর্ঘ এই সুড়ঙ্গের খননকাজ শেষ হয় ২০২০ সালের ২ আগস্ট। আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গামুখী দ্বিতীয় দক্ষিণ সুড়ঙ্গের খননকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর। ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর এই খননকাজ শেষ হয়। আর দুটি সুড়ঙ্গের মধ্যে ৩টি ক্রস প্যাসেজ বা সংযোগপথও রয়েছে। আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার। মূল টানেলের বাইরে দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক রয়েছে ৫ দশমিক ৩৫০ কিলোমিটার। টানেলের উভয় প্রান্তে স্ক্যানার বসানো হয়েছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট ৪টি লেন রয়েছে।
খুলনা মংলা রেল প্রকল্প ॥ ঢাকা থেকে যতো সহজে খুলনা যাওয়া যাবে- তার চেয়ে আর সহজে যাওয়া যাবে খূলনা থেকে মংলায়। যেতে হবে শুধুই রেল পথে। সাড়ে ৬৪ কিলোমিটারের এই প্রকল্পটির সংযোগ দেশীয় গ-িতেই সীমা পেরিয়ে আন্তঃদেশীয় সংযোগ ঘটাবে। রেলওয়ে বিভাগ বাস্তবায়ন করছে এই প্রকল্পটি। তবে এটি এগুচেছ শম্বুকগতিতে। ২০১০সালে হাতে নেয়া হয়েছিল ১৭২১ কোিিট টাকায় যা বাড়তে বাড়তে এখন দাড়িয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটিতে। মংলার সঙ্গে দেশের সর্বত্র এবং আনস্তদেশীয় সংযোগে বাণিজ্যে দেখা দিবে নতুন দিগন্ত। এক যুগেরও বেশী সময় ধরে চলা প্রকল্পটির কাজ এই আগস্টেই শেষ হচেছ। আর খুলে দেয়া হবে সেপ্টেম্বরে। তাতে কোন সন্দেহ নেই বলে জানিয়েছে রেলসূত্র।
ঢাকা কক্সবাজার রেল প্রকল্প ॥ এক সময় স্বপ্ন দেখা হতো- যদি টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত রেলে চড়া যেত। তাহলে অনেক আরাম হতো। যানজটে ঘন্টার পর ঘন্টা কিংবা ছয় ঘন্টার জার্র্নি ১২ ঘন্টা লাগতো না। হ্যা। সেই স্বপ্ন আজ ফলেছে। বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেলসংযোগও চালু হতে যাচ্ছে সেপ্টেম্বরে। ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘন্টায় চট্রগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে আড়াই ঘণ্টায় ট্রেন পৌঁছাবে কক্সবাজারে। প্রতিদিন এক লাখেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন এই রুটে। প্রাথমিক হিসাবে, ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনে মানভেদে প্রতি টিকেটের দাম ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পড়বে। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে ১০টি করে মোট ২০টি ট্রেন ডুয়েল গেজ ট্র্যাকে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এই রেলের মাধ্যমেই পর্যটকসহ সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। এরই মধ্যে সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে চান্দেরপাড়ার ২৯ একর জায়গায় ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনুকের আদলে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন নির্মাণ প্রায় শেষ হয়েছে। ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের ছয় তলা ভবনের রেলস্টেশনে থাকা-খাওয়াসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। বর্তমানে ভবনের চারদিকে গ্লাস ফিটিংস ও চীন থেকে আনা স্টিলের ক্যানোফি স্থাপনের কাজ চলছে। কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, আগামী সেপ্টেম্বরের আগেই রেলস্টেশনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir