রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চারঘাট ও বাঘার পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক উজ্জল কাজিপুর পুজা মণ্ডপ পরিদর্শন করলেন উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ জয়পুরহাটে অতিরিক্ত জেলা জজ-১ম আদালতের রেকর্ড থেকে রায় আদেশ গায়েব “ চারঘাট প্রেসক্লাব সদস্যদের সাথে উপজেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা আইসিটি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সিরাজগঞ্জে পুজামন্ডপ পরিদর্শন ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক আ হ মুহাম্মদ খোকনের জন্মদিন পালন ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, চিন্তায় জেলেরা ‘আমাকে এখন পর্যন্ত কেউ দেখতে আসেনি, কারণ পরিবারে কেউ নেই’ শেষ মুহূর্তে ইলিশ কিনতে ক্রেতাদের লাইন, কেজি ২৭০০ টাকা বিয়ে করেছেন সমন্বয়ক হাসনাত, ফেসবুকে জানালেন সারজিস

কোরআন-হাদিসে গাছের কথোপকথন

রিপোর্টারের নাম / ২০২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩, ১:৩৩ অপরাহ্ন


মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা

মহান আল্লাহ গাছকে মানুষের অন্যতম বন্ধু বানিয়েছেন। এই গাছেরও প্রাণ আছে, অনুভূতি আছে এমনকি যোগাযোগ করারও ক্ষমতা আছে। মহান আল্লাহর অন্যান্য সৃষ্টির মতো গাছও তাঁর তাসবিহ পাঠ করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত আসমান ও জমিন এবং এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু তাঁর তাসবিহ পাঠ করে এবং এমন কিছু নেই, যা তাঁর প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করে না; কিন্তু তাদের তাসবিহ তোমরা বোঝো না।

নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৪৪)
প্রশ্ন হলো, গাছ কিভাবে তাসবিহ পড়ে, তাদের কি কথা বলার শক্তি আছে, তাদের কি কোনো ভাষা আছে? উত্তর মহান আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি কি দেখনি যে আসমান ও জমিনে যারা আছে তারা এবং সারিবদ্ধ হয়ে উড়ন্ত পাখিরা আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে? প্রত্যেকেই তাঁর সালাত ও তাসবিহ জানে। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত।’ (সুরা নুর, আয়াত : ৪১)
এই আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, প্রত্যেকেই তাঁর সালাত ও তাসবিহ জানে। অতএব গাছও তাদের নিজস্ব ভাষায় আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে। তাদেরও নিজস্ব ভাষা আছে। বিজ্ঞানের মতে, গাছও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে।
মাটির নিচে ছত্রাকের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে গাছ একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে, নিজেদের শক্তি ও পুষ্টি আদান-প্রদান করে। বিজ্ঞানীরা এই ছত্রাকের নেটওয়ার্কের নাম দিয়েছেন উড ওয়াইড ওয়েব। কিছু গাছ বিপদ থেকে সাবধান করে বা পুষ্টি বিতরণ করে চারাগাছকে বাঁচতে সাহায্য করে। আবার কিছু গাছ অন্যের শক্তি ও পুষ্টি নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। (বিবিসি) শুধু তা-ই নয়, গাছ শব্দে সাড়া দিতেও সক্ষম।

নবীজি (সা.)-এর হাদিসেও এর প্রমাণ রয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক বেদুইন এসে বলল, আমি কিভাবে অবগত হব যে আপনি নবী? তিনি বলেন, ওই খেজুরগাছের একটি কাঁদিকে আমি ডাকলে (তা যদি নেমে আসে) তাহলে তুমি কি সাক্ষ্য দেবে যে আমি আল্লাহ তাআলার রাসুল? রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ডাকলেন, সে সময় কাঁদি খেজুরগাছ থেকে নেমে নবী (সা.)-এর সম্মুখে এসে গেল। তারপর তিনি বলেন, এবার প্রত্যাবর্তন করো এবং তা নিজ স্থানে ফিরে গেল। সে সময় বেদুইনটি ইসলাম গ্রহণ করল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬২৮)

শুধু তা-ই নয়, নবীজি (সা.)-এর বিরহে খেজুর কাণ্ডের ক্রন্দনের নজিরও হাদিসে পাওয়া যায়। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, (মসজিদে নাববীতে) এমন একটি (খেজুরগাছের) খুঁটি ছিল, যার সঙ্গে হেলান দিয়ে নবী (সা.) দাঁড়াতেন। অতঃপর যখন তাঁর জন্য মিম্বর স্থাপন করা হলো, আমরা তখন খুঁটি হতে দশ মাসের গর্ভবতী উটনীর মতো ক্রন্দন করার শব্দ শুনতে পেলাম। এমনকি নবী (সা.) মিম্বর হতে নেমে এসে খুঁটির ওপর হাত রাখলেন। (বুখারি, হাদিস : ৯১৮)

সুবহানাল্লাহ, নবীজি (সা.)-এর এই হাদিসগুলোর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বর্তমান যুগে পাওয়া যায়। যদিও এগুলো ছিল নবীজি (সা.)-এর মুজিজা। তবু দ্বিনি ভাইয়ের ঈমানের মজবুতির জন্য টাইমস অব ইসরায়েলে প্রকাশিত একটি খবরের কিছু এখানে উদ্ধৃত করছি।

সামপ্রতিক ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা গাছের বলা ‘শব্দ’ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। গত কিছু দিন আগে তেল-আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এই গবেষণাটি মর্যাদাপূর্ণ বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘সেল’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

সেখানে ইসরায়েলি গবেষকরা দাবি করেন, তাঁরা শুধু গাছের শব্দই শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন তা নয়; বরং তাঁরা গাছের বিভিন্ন ভাষাও শনাক্ত করেছেন। গাছের একেক প্রজাতি একেক ধরনের ‘ভাষায়’ নিজেদের মধ্যে কথোপকথন চালায় বলেও তাঁরা জানতে পেরেছেন।

গবেষকরা আরো দাবি করেন, তাঁরা একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মানসিকভাবে চাপে থাকা উদ্ভিদের করা শব্দ ধারণ করেছেন। সেখানে তাঁরা দেখতে পান, উদ্ভিদ ক্লিকের মাধ্যমে ‘কথোপকথন’ চালায়। এই শব্দ পপকর্ন ভাজার সময় তা ফেটে গেলে যে ধরনের শব্দ হয় অনেকটা সে রকম। এই নিঃসৃত শব্দ অনেকটা মানুষের কথা বলার মতোই, তবে এর ফ্রিকোয়েন্সি থাকে অনেক বেশি, যা মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে হওয়ায় মানুষ তা শুনতে পায় না। (টাইমস অব ইসরায়েল ডটকম)

হয়তো একসময় মানুষ প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে গাছের ভাষাও রপ্ত করে ফেলবে। গাছের সঙ্গে যোগাযোগও করবে। নবীজি (সা.)-এর একটি হাদিসে অনেকটা সেদিকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদি সমপ্রদায়ের যুদ্ধ না হবে। মুসলিমগণ তাদের হত্যা করবে। ফলে তারা পাথর বা গাছের পেছনে লুকিয়ে থাকবে। তখন পাথর বা গাছ বলবে, ‘হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা, এই তো ইহুদি আমার পেছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা করো।’ কিন্তু ‘গারকাদ’ নামক গাছ দেখিয়ে দেবে না। কারণ এটা হচ্ছে ইহুদিদের সহায়তাকারী গাছ। (মুসলিম, হাদিস : ৭২২৯)

হাদিসের ভাষ্য দেখে মনে হচ্ছে, হয়তো শেষ যুগে মানুষের কাছে এমন কোনো প্রযুক্তি আসবে, যা দিয়ে তারা গাছের সঙ্গে কথা বলবে, অথবা এমনও হতে পারে যে আল্লাহর বিশেষ কুদরতে মুসলমানরা সেই মুহূর্তে গাছের ভাষা বুঝবে। ঘটনাটি ঘটবে এটা সত্য। তবে এর পদ্ধতি কী হবে, সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir