নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত আসন সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী)। আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় বর্তমান এমপি শিল্পপতি আব্দুল মমিন মন্ডলকে। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবে ঘোষনা দেয়ায় নৌকার বিপক্ষে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। একই আসনে তার জামাতা নুরুল ইসলাম সাজেদুল উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে জামাতার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু জামাতা নুরুল ইসলাম সাজেদুলের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় সাজেদুল আপিল না করে জামাতা-শ্বশুর ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই দুজনের সাথে বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলার প্রায় ৮০ পার্সেন্ট আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী, প্রায় সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সহমত প্রকাশ করে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের পক্ষে কাজ করতে একমত পোষন করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস জানান, শুক্রবার বেলকুচি পৌর মেয়রের বাড়িতে আমাদের পারিবারিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ বিশ্বাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন নুরুল ইসলাম সাজেদুল। এদিকে শনিবার বিকেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দের বাসভবনে বৈঠক করেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
বৈঠকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস, সাবেক সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান মাখন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক ভাষানী, বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ বিশ্বাসের পক্ষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দলীয় সুত্র বলছে, ইতিপুর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নৌকার বিপক্ষে ভোটে লড়ে নুরুল ইসলাম সাজেদুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলন এবং পৌরসভা নির্বাচনে তার আপন ছোট ভাই সাজ্জাদুল হক রেজা নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে লড়ে বেলকুচি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এ কারনে নুরুল ইসলাম সাজেদুল ও তার ভাই পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার বেলকুচিতে ভোটের লড়াইয়ে জনপ্রিয়তা ও ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। দুই ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ও প্রভাবের সাথে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের প্রভাব একত্র হওয়ায় আসনটিতে ভোটের হিসেব-নিকেশ পাল্টে যেতে পারে মনে করছেন সকলেই। আসনটি নৌকার ভরাডুবি হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। নির্বাচনী ট্রেন ছেড়ে গেলেও বেলকুচি-চৌহালীতে নৌকার পক্ষে কোন নেতাকর্মীকে এখন পর্যন্ত মাঠে নামতে দেখা যায়নি।