
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে লুটের কিছু টাকাসহ ওই কেনা একটি টেলিভিশন ও একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো নাইম, মো. আকাশ আহমেদ সাগর, আব্দুল আহাদ, মো. বিপ্লব, নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ, মো. জাহাঙ্গীর, সোহেল রানা, মো. হাসান, রাসেল ওরফে সাকিল, আব্দুল বারেক শেখ ওরফে আলামিন, মো. রাশেদুল ইসলাম, সোহেল রানা, শফিকুল ইসলাম, প্রান্ত সিকদার ওরফে ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, আবুল কাশেম, রাজু হোসাইন চাঁদ ও সাইদুর রহমান।
ডিএমপি জানায়, সেদিন হামলাকারীদের উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে পুলিশ সর্বোচ্চ সংযত ভূমিকা পালন করে এবং তাদের কাছে সেদিন করজোড়ে মাফও চেয়েছিল হামলা না করতে। তবুও তাদের থামানো যায়নি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম। এসময় ডিএমপির ক্রাইম ও প্রিভেনশন ইউনিটের যুগ্ম কমিশনার মুহিদুল ইসলাম, তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান ও ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় ৪টি আইনে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে থানা পুলিশ ১৩ জন, সিটিটিসি ৩ জন এবং গোয়েন্দা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির এই ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে লুট করা ৫০ হাজার টাকা এবং লুটের টাকায় কেনা একটি টেলিভিশন ও একটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সরাসরি জড়িত অন্যান্যদের শনাক্তের কাজ চলছে এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, তারা দুষ্কৃতিকারী। তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আমরা খুঁজছি না। তারা আইন ভঙ্গ করেছে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
গত কয়েকদিনে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারে যে ঘটনা ঘটেছে এর অন্তরালে আরও কিছু বিষয় আছে। আমরা যদি সেখানে অ্যাকশনে যেতাম, গুলি হতো, দু-চারজন মারা যেত। পাল্টা তারা পুলিশের ওপর আক্রমণ করতো। যে কারণে আমরা অ্যাকশনে যেতে পারি নাই এবং সেদিন কোনো হিউম্যান লাইফের কোনো অক্সিডেন্ট হয়নি। এটা মনে করি আমাদের এসিভমেন্ট, যে কোনো ধরনের ক্যাজুয়ালটি ছাড়া এটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
তারমানে সেদিন পুলিশ অ্যাকশনেই যায়নি? এমন প্রশ্নে এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, সেখানে আমাদের পুলিশের যে জনবল ছিল, গুলি করলে পুলিশ ও পাবলিকের দুই পক্ষেরই ক্যাজুয়ালটি হতে পারতো। এই সম্ভাবনায় পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা হয়নি। সেসময় ঘটনাস্থলে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে পুলিশ সর্বোচ্চ সংযত ভূমিকা পালন করে এবং তাদের কাছে সেদিন করজোড়ে মাফও চেয়েছিল হামলা না করতে। তবুও তাদের থামানো যায়নি। সেখানে লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ডগ্রেনেড মারলে আমাদের পুলিশের ক্যাজুয়ালটি হতো।
প্রকাশক : সোহেল রানা সম্পাদক: আব্দুস সামাদ সায়েম
©২০১৫-২০২৫ সর্বস্ত্ব সংরক্ষিত । তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত (নিবন্ধন নং-২১০)