শীতের শুরুতেই গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে খেজুর রস সংগ্রহের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হলেও এর আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসচেতনভাবে সংগৃহীত কাঁচা খেজুর রস প্রাণঘাতী ভাইরাস সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে গাছিরা খেজুর গাছে মাটির হাড়ি বা কলস পেতে রস সংগ্রহ করেন। তবে এসব হাড়ির খোলা মুখে শুধু খেজুর রসই জমা হয় না, রাতের আঁধারে খাদ্যের সন্ধানে আসা বাদুড় ও বিভিন্ন পাখিরও অবাধ বিচরণ ঘটে সেখানে।
ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের রাতে নিশাচর বাদুড় খেজুর গাছের হাড়িতে বসে রস পান করে। এ সময় তারা হাড়ির কিনারে ঝুলে থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে রসের ভেতরেই মল-মূত্র ত্যাগ করে। ফলে রস দূষিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
স্থানীয় গাছি মোঃ জাদু জানান, কুয়াশার কারণে রাতভর হাড়ি পাহারা দেওয়া সম্ভব হয় না। রাতের বেলা বাদুড় তাড়ানোর চেষ্টা করি, কিন্তু কুয়াশায় সব সময় নজরে রাখা যায় না। সকালে রস নামাতে গিয়ে অনেক হাড়িতে বাদুড়ের লালা বা নোংরা দেখতে পাই বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), মেডিকেলের চিফ ডা. মোঃ মকসেদ আলীর মতে, বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তা মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে, অনেক সময় প্রাণঘাতীও হয়ে ওঠে। বিশেষ করে কাঁচা বা অপরিশোধিত খেজুর রস সরাসরি পান করলে ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
খেজুর রস বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, এর নিরাপদ সংগ্রহ ও ভোগ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। খেজুর রস সংগ্রহের সময় হাড়ির মুখ ঢেকে রাখা, কাঁচা রস না খাওয়া এবং রস ভালোভাবে ফুটিয়ে নেওয়ার পর ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তারা আরও বলেন, সামান্য সচেতনতা ও সতর্কতাই পারে এই নীরব কিন্তু ভয়ংকর ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে।#
প্রকাশক : সোহেল রানা সম্পাদক: আব্দুস সামাদ সায়েম
©২০১৫-২০২৫ সর্বস্ত্ব সংরক্ষিত । তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত (নিবন্ধন নং-২১০)