বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম পাওয়ায় রঙিন ফুলকপি ও বাধাঁকপি চাষে খুশি দিনাজপুরের বীরগঞ্জের কৃষকরা। ফলনও বেশি হওয়ায় আগামীতে চাষ ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করে কৃষি বিভাগ।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এবার টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্যতিক্রমী শীতকালীন সবজি রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছে কৃষকরা। কোনোটি হলুদ, কোনোটি বেগুনি। আর এসব ফুলকপি ও বাঁধাকপি কোনও প্রকার কীটনাশক ছাড়াই জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে চাষ করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় সবজিগ্রাম নামে খ্যাত বীরগঞ্জের সাতোর ইউপির প্রাণনগর গ্রামের কৃষক মো. শামীম ইসলাম তার ২০ শতক জমিতে ক্যারোটিন জাতের রঙিন ফুলকপি চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। শামীম ইসলাম জানান, এবছর কৃষি অফিসের সহায়তায় রঙিন ফুলকপি চাষ করেছি এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনও রোগ বালাই নেই, খরচ কম।
তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র জৈব বালাইনাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারেই এই ফুলকপি চাষ করেছি। বাজারে ব্যাপক চাহিদা দামও ভালো। স্থানীয় বাজারে প্রতিটি ফুলকপি ৫০-৬০টাকায় বিক্রি করছি। চাষে খরচ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা। বাজারে ফুলকপি বিক্রয় করে খরচের টাকা উঠে এসেছে এবং মাঠে এখনো এক হাজার পিস ফুলকপি রয়েছে।
নিজপাড়া ইউপির দামাইক্ষেত্র গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায় জানান, রঙিন কপি এবার কৃষি অফিসের উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতক জমিতে চাষ করেছি। ব্যাপক ফলন হয়েছে। দামও ভালো। প্রতিপিস কপি বাজারে ১৫ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। ২০ হাজার টাকার কপি বিক্রয় করেছি। অন্য কপির তুলনায় রঙিন কপির চাহিদা থাকায় এখন যা আছে খরচ বাদ দিয়ে বেশ লাভ হবে।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এবার ক্যারোটিনা জাতের রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি পরীক্ষামূলক চাষ এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। দেখতেও যেমন আকর্ষণীয় তেমনি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এটিতে জ্যান্তফিল, ক্যারোটিনেট, ভিটামিন এ থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।ফুলকপির সাইজ এক কেজি পর্যন্ত হয়।
দিনাজপুরের অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আবুরেজা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এ বছর দিনাজপুর জেলায় সাড়ে ৪ হেক্টর জমিতে রঙ্গিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। ভোক্তাদের মাঝে নিরাপদ উচ্চ মানের সবজি উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।