বর্ষাকালে গ্রামে খাল-বিল, পুকুরে দেখা মিলে জাতীয় ফুল শাপলার। পানিতে থাকা এই ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। আবার পানি থেকে তুলে শাপলা ফুলের লম্বা ডাঁটা খাওয়া হয় সবজি হিসেবে। বর্ষাকালে বাজারে পাওয়া যায় শাপলার ডাঁটা।
গ্রামের মতো শহরেও শাপলা ডাঁটার জনপ্রিয়তা বেড়েছে ইদানীং। শাপলা শুধু সৌন্দর্যবর্ধনকারী নয়, এতে আছে বহুবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা।
চলুন জেনে নিই শাপলার ডাঁটার পুষ্টিগুণ নিয়ে কী বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
শাপলার ডাঁটা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি।
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় শাপলার ডাঁটা রাখলে পূরণ হবে পুষ্টির চাহিদা। পাশাপাশি কমবে বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকিও। এতে রয়েছে পানি, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন ও মিনারেলসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম আয়রন ইত্যাদি উপাদান।
উপকারিতা
১. শাপলার ডাঁটা থেকে শরীরের পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। এতে থাকা ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
২. শরীরের কোষ গঠন ও ক্ষয়পূরণের জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন। শাপলার ডাঁটা থেকে পাওয়া প্রোটিন শরীরের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করে। এতে থাকা ভিটামিন-সি শরীরের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
৩. শাপলার ডাঁটাতে থাকা ভিটামিন-বি১ শরীরের কার্বোহাইড্রেটকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে। এটি গ্লুকোজ বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয়। শাপলার ডাঁটার পুষ্টি উপাদানগুলো ইনসুলিনের স্তর স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪. ভিটামিন-বি৭ বা বায়োটিন পানিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন। এটি শরীরের বিপাক ও কার্যক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। শাপলার ডাঁটা থেকে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এই বায়োটিন পাওয়া যায়।
৫. শাপলার ডাঁটাতে রয়েছে একটি বিশেষ উপাদান ফ্লেভনল গ্লাইকোসাইট। এটি মাথার রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং মাথা ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।
৬. শাপলা ডাঁটার উপাদান স্নায়ু, পেশি, হার্টের কার্যক্রমে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া যকৃতের সুরক্ষায়ও ভূমিকা রাখে শাপলার ডাঁটা।
৭. শাপলার ডাঁটা খেলে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়। এটি ত্বকের কোষ গুলোকে হাইড্রিয়েটিং ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতেও ভূমিকা রাখে শাপলার ডাঁটা। নিয়মিত এ সবজি খেলে চুল হবে প্রাণবন্ত ও মসৃণ।
৮. শাপলাতে আছে গ্যালিক এসিড নামক এনজাইম, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৯. শাপলার ডাঁটাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম হাড়, দাঁত মজবুতসহ নানা কাজ করে থাকে। এসিডিটি, রক্ত আমাশয়, চুলকানি ইত্যাদি প্রকৃতির রোগ প্রতিরোধ হয় শাপলার ডাঁটা খেলে।