মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির রেকর্ড দরপতন হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রুপির দর কমে যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বনিম্নে নেমেছে। এর বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে মার্কিন ডলার। অফশোর চীনা ইউয়ানের দাম কমেও এক বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির রেকর্ড দরপতন হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রুপির দর কমে যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বনিম্নে নেমেছে। এর বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে মার্কিন ডলার। অফশোর চীনা ইউয়ানের দাম কমেও এক বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রুপির দরপতন আরো বেশি হতো, কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইর হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা রোখা গেছে।
আগের দিন সোমবারও রুপির দরপতন হয়েছে ০.২৫ শতাংশ। যা ছিল ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন। মূলত স্থানীয় মুদ্রার এই দরপতনের বড় কারণ ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ। এক নোটে এএনজেডের অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষক ধীরাজ নিম বলেন, ‘ভারতের দুর্বল জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমাতে পারে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক আরবিআইর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমাও রুপির পতনকে ত্বরান্বিত করছে।
দুই মাসে রিজার্ভ কমেছে ৪৮ বিলিয়ন ডলার : গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে দুই মাসে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৪৮ বিলিয়ন ডলার। এ অবস্থায় ডলারের বিপরীতে রুপির দরপতন রুখতে আরবিআই ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করছে মুদ্রাবাজারে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ ৭০৫ বিলিয়ন ডলার হয়। এর পরই টানা আট সপ্তাহ দরপতন ঘটেছে। আরবিআইর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ২২ নভেম্বর দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১.৩১ বিলিয়ন ডলার কমে হয়েছে ৬৫৬.৫৮ বিলিয়ন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিজার্ভ কমার কারণ ডলারের বহিঃপ্রবাহ বেড়ে যাওয়া।
ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কমে ৫.৪ শতাংশ হয়েছে, যা প্রায় দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগের বছর একই সময়ে দেশটির প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.১ শতাংশ। মূলত উত্পাদন খাতের ধীরগতির কারণেই প্রবৃদ্ধি কমেছে. যা দেশটির অর্থনীতির জন্য চিন্তার কারণ।
তবে ভারত এখনো দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। কারণ চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪.৬ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়ে ছিল ৪.৩ শতাংশ। দেশটির গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড হয়েছে ৫.৬ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ৬.৮ শতাংশ।
জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩.৫ শতাংশ, যা আগের ২ শতাংশ থেকে বেশি। তবে উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি আগের প্রান্তিকের ৭ শতাংশ থেকে কমে ২.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।